বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৪৬ লাখ ৪৩ হাজার ছাড়াল

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ছয় হাজার মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন লাখ ৭২ হাজার ছাড়িয়েছে।

সর্বশেষ এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুতে তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে রাশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড সংক্রমিতের সংখ্যা ২২ কোটি ৫৪ লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অন্য দিকে করোনায় প্রাণ হারানোদের সংখ্যাও ৪৬ লাখ ৪৩ হাজারে পৌঁছে গেছে।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন পাঁচ হাজার ৮৮৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ১৭ হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৬ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৩ জনে পৌঁছেছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন তিন লাখ ৭২ হাজার ৩৬৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৭৬ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৮ হাজার ২০১ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ দিকে শেষ এক দিনে বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি শনাক্তের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪৫০ জন। আর প্রাণ হারিয়েছেন ২৫১ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ১৮ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬২ জন শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া করোনার আক্রান্ত হয়ে ছয় লাখ ৭৭ হাজার ৯৮৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

অপর দিকে বিশ্বে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে রাশিয়া। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৮৮ জন। আর নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ৫৫৪ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭১ লাখ ৪০ হাজার ৭০ জন। আর মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার ৭৪৯ জনের।

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৯২ জন এবং নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৬১৫ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি নয় লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৮৮২ জনের।

এ দিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১৯ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৩৭৪ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত তিন কোটি ৩২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৪২ জন এবং মারা গেছেন চার লাখ ৪২ হাজার ৯০৭ জন।

প্রাণহানির তালিকায় ওপরের দিকেই রয়েছে মেক্সিকোর নাম। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ৬৭৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১২ হাজার ৫১১ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৫ লাখ ছয় হাজার ৭৪৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৬৭ হাজার ৫৭৪ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮৮ জন এবং নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৭৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৫১১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮৯ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৮৭ জন এবং নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ২১৯ জন। করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫২ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৬ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ১ লাখ ১৪ হাজার ৩১১ জন মারা গেছেন।

এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬৯ লাখ ৫ হাজার ৭১ জন, যুক্তরাজ্যে ৭২ লাখ ২৬ হাজার ২৭৬ জন, ইতালিতে ৪৬ লাখ ৬ হাজার ৪১৩ জন, তুরস্কে ৬৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫১ জন, স্পেনে ৪৯ লাখ ৭ হাজার ৪৬১ জন এবং জার্মানিতে ৪০ লাখ ৮৭ হাজার ১০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

অন্য দিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১৫ হাজার ৫১৭ জন, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩৪ হাজার ২০০ জন, ইতালিতে এক লাখ ২৯ হাজার ৯১৯ জন, তুরস্কে ৫৯ হাজার ৮৮৬ জন, স্পেনে ৮৫ হাজার ২৯০ জন এবং জার্মানিতে ৯৩ হাজার ১২৮ জন মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।