মঙ্গলবার, জুন ২৪, ২০২৫
মঙ্গলবার, জুন ২৪, ২০২৫

বাজারে গরুর মাংসের ক্রেতা কম, মুরগি-মাছেই মিলছে স্বস্তি!

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে গরুর মাংসের চড়া দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়, যা অনেক মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য অনেকটাই নাগালের বাইরে। এদিকে অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেকটাই কম দামেই মিলছে ব্রয়লারসহ অন্যান্য জাতের মুরগির মাংস। ফলে গরুর মাংস থেকে মুখ ফিরিয়ে তুলনামূলক সস্তা মুরগির মাংসের দিকে ঝুঁকছেন ক্রেতারা। অপরদিকে মাছের বাজার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় স্বস্তিতে ক্রেতারা।

শুক্রবার (২০ জুন) সকালে রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৩০-২৪০ টাকায়। দেশি মুরগি ৫০০-৫৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, গত মাস-খানেক যাবত বাজারে মুরগির অনেকটা কমে বিক্রি হচ্ছে। তাই ক্রেতাদের ভিড়ও বেশি। অনেকেই বেশি পরিমাণে কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখছেন।

এদিকে মুরগির দাম কমলেও বাজারে আগের মতোই চড়া রয়েছে খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে মাছের বাজার। বাজারে প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২২০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পোয়া ৪০০ টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা ও দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা শফিকুল ইসলাম নামের এক স্কুল শিক্ষক বলেন, বাজারে গরুর মাংসের দাম অনেক বেশি। সেই তুলনায় মুরগির দাম বেশ কম থাকায় মুরগির মাংসই নিয়েছি। গরুর তুলনায় বাচ্চারাও মুরগির মাংসই বেশি পছন্দ করে।

তিনি আরও বলেন, দাম তুলনামূলক কম থাকায় একটু বেশি করে কিনে নিয়েছি। আমার মতো আরও অনেকেই নিচ্ছে। বাসায় এখন মাছের চেয়েও মুরগিটাই বেশি খাওয়া হয়।

সেলিনা হোসেন নামের এক গৃহিণী বলেন, এক কেজি গরুর মাংস নিয়েছি ৮০০ টাকায়। দাম কিছুটা বেশিই মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছু তো করার নেই। দামাদামি করারও কোনো সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীদের ভাবখানা এমন যে নিলে নেন, না নিলে বিদায় হোন।

এদিকে দাম তুলনামূলক কম থাকায় বিক্রি ভালো হওয়ায় খুশি মুরগি বিক্রেতারা। রামপুরা বাজারের মুরগি বিক্রেতা রাসেল মিয়া বলেন, মুরগির মাংস অনেকদিন যাবতই কম। ১৬০/১৭০ টাকার মধ্যেই সবসময় থাকে। বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় কেউই আর মুরগি ধরে রাখতে চায় না। তাই দাম কিছুটা কম হলেও ছেড়ে দেয়। রাখতে গেলেই দিনে ৪/৫টি করে মেরে যায়। যে কারণে ১৭০ টাকায়, এমনকি মাঝেমধ্যে ১৬০ টাকা হলেও দিয়ে দিচ্ছি।

আরেক মুরগি বিক্রেতা মফিজুল ইসলাম বলেন, মাসখানেক আগেও ব্রয়লার ১৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখনও সেই দামেই বিক্রি করছি। লাভ তেমন নেই, প্রতি মুরগিতে কোন রকম খরচটা উঠতেছে।

বনশ্রী এলাকার মাছ বিক্রেতা জসিম উদ্দিন জানান, মাছের বাজারে খুব বেশি পার্থক্য নেই। কিছু মাছের দাম কিছুটা কমেছে, আবার ইলিশসহ আরও কিছু মাছের দাম বেড়েছে। তবে সবমিলিয়ে ভালোই বিক্রি হচ্ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *