সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৪
সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৪
অর্থনীতিআলোচিত সংবাদব্রেকিং নিউজ

এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়ল ৩০ টাকা

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির খড়্গ সাধারণ মানুষের ঘাড় থেকে কিছুতেই নামছে না। একের পর এক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দামে নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে তাদের। ৬০-৮০ টাকার কাঁচামরিচের ঝাল কিনতে যখন ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা তখন বাজারে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে আরেক নিত্য পণ্য পেঁয়াজকে ঘিরে। ১ কেজি পেঁয়াজ কিনতে এখন গুনতে হচ্ছে ১২০ টাকা। অথচ মাত্র এক সপ্তাহ আগেও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৯০ টাকা। এমন অবস্থায় বেশ বিপাকেই পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

রোববার (৭ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর নিউমার্কেট, আজিমপুর, পলাশী এবং চাঁনখারপুল এলাকার বিভিন্ন খুচরা দোকান ঘুরে পেঁয়াজের বাড়তি দামের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এলাকাভেদে এসব দোকানে সর্বনিম্ন ১২০ থেকে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা পর্যন্ত দেশি পেঁয়াজের দাম চাইতে দেখা গেছে।

সরকারি সংস্থার ঢাকা মহানগরীর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের খুচরা বাজার দরের প্রকাশিত তথ্যেও পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বর্তমানে নতুন দেশি পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ১ সপ্তাহ আগে যার বিক্রয়মূল্য ছিল সর্বনিম্ন ৯০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। এই একই পেঁয়াজ ১ মাস আগে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ৮০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮৫ টাকায়। আর ১ বছর আগে এই সময়ে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ৭০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা দরে। সেই হিসাব অনুযায়ী ১ বছরে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশের চেয়েও বেশি।

অপরদিকে টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, আমদানি করা পেঁয়াজ এখন খুচরা বাজারে সর্বনিম্ন ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ১ সপ্তাহ আগে এর বিক্রয়মূল্য ছিল সর্বনিম্ন ৯৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। আর ১ মাস আগে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ৮৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯৫ টাকায়। আর ১ বছর আগে এই সময়ে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা দরে।

এই হিসাব অনুযায়ী ১ বছরে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের চেয়েও বেশি।

পেঁয়াজের বাড়তি দামের বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

সাম্প্রতিক সময়ে খরা, অতিবৃষ্টি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় রেমালসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। যার ফলে বাজারে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়া দাম বাড়ার কারণ হতে পারে।

নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে পরিবহন সমস্যা, সরবরাহ চেইনের অব্যবস্থা এবং পণ্য মজুতের অভাবকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এখন চাহিদার তুলনায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ নেই। সেকারণেই দাম বেড়েছে। এবার আরও দাম বাড়বে। বন্যা ও পানির কারণে সার্বিকভাবে পেঁয়াজের উৎপাদন কমেছে। এখনও উত্তরাঞ্চলে বন্যা বিরাজ করছে। যার কারণে পণ্য সরবরাহ কম। আর আড়তেই দাম বেশি। আমাদের তো কিছুই করার নেই। তবে সহসাই দাম কমবে না।

আফজাল হোসেন নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় দেশি এবং ভারতীয় দুই ধরনের পেঁয়াজের দামই বেড়েছে। এই সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ৩০-৪০ টাকার মতো বেড়েছে। আমরা কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি দামে পেঁয়াজ কিনে আনি। তারা আমাদের যেমন দামে বিক্রি করতে বলে আমরা তেমন দামেই বিক্রি করি।

অপরদিকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এমন এক দিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে বলে জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার যে পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৮৫ টাকা কেজি তা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা খুচরা বাজারে তা বিক্রি করছেন ১১০ টাকা কেজি।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কম এবং দামও বেশি। এছাড়া, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। যার কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *