আগামীতে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণে তরুণ প্রজন্মের মেধাবীদের এগিয়ে আসতে হবে : মঈন খান
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব গ্রহণে তরুণ প্রজন্মের মেধাবীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।
‘নতুন প্রজন্মের দিকে বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে’-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই দেশ নতুন প্রজন্মের দেশ। আমরা নতুন প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আছি। ভবিষ্যতে তারা বাংলাদেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করবে, লেখাপড়া শেষ করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। যারা এখনও পড়াশোনা শেষ করেনি, তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যাবে। দেশ পরিচালনার গুরু দায়িত্বের জন্য তারা প্রস্তুতি নেবে। তারা জনগণের ভোটের অধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে।’
ড. মঈন খান আজ বুধবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমানের সমাধিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি সংস্কারকে রাষ্ট্রের চলমান একটি প্রক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘সংস্কার কখনও থেমে থাকে না। আগে সংস্কার পরে নির্বাচন-এটা অর্থবহ নয়। আসলে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কার, প্রশাসন সংস্কার, নির্বাচন কমিশন সংস্কারসহ অত্যাবশ্যকীয় অন্যান্য সংস্কার দ্রুত শেষ করতে হবে। কারণ, বিগত সাড়ে পনের বছরের মধ্যে অনুষ্ঠিত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে নতুন প্রজন্ম ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। তারা ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করি, সমন্বয়ের মাধ্যমে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের ওপর একটি স্বৈরাচারী শাসন চেপে বসেছিল। বাংলাদেশের মানুষের বাক-স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র হরণ করেছিল তারা। বাংলাদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
মঈন খান বলেন, ‘বিএনপি গত ১৭ বছর ধরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সংগ্রাম করেছে। তবে, সদ্য বিদায়ী বছরের জুলাই মাসে ‘কোটা বিরোধী’ আন্দোলনে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর রক্তের বিনিময়ে আগস্টে তা স্বৈরাচার মুক্তির আন্দোলনে রূপান্তিত হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা কাপুরুষের মত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। আগস্টে ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন সেটা ছিল স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকরের বিরুদ্ধে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এটি শুধু গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়, অর্থনৈতিক অধিকারের আন্দোলনও। সেই আন্দোলনে দেশের সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ছিল। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও ওই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিল। তারা সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক পরিচয়ে যায়নি, ছাত্র পরিচয়ে গিয়েছিল।’
এ সময় তিনি জানান, চব্বিশের ১৯ জুলাই নরসিংদীতে শেখ হাসিনার মিথ্যা মামলায় কারাগারে থাকা জনতা জেল ভেঙে বের হয়ে আসে। সেদিন ৩৪ জন নিহত হয়। এর মধ্যে ২৪ জন ছাত্রের প্রত্যেকে ছিল জাতীয়তাবাদী পরিবারের। তারা সেদিন বিএনপি পরিচয়ে যায়নি, ছাত্রের পরিচয়ে জীবন দিয়েছিল, রক্ত দিয়েছিল। কী কারণে জীবন দিয়েছিল? বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতে হবে, এখানে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে আসতে হবে। ভোটের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরসহ সংগঠনটির অসংখ্য নেতাকর্মী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।