সোমবার, জানুয়ারি ৬, ২০২৫
সোমবার, জানুয়ারি ৬, ২০২৫
ময়মনসিংহলীড নিউজ

নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে রাষ্ট্রের পূর্ণ সংস্কার হবে : ময়মনসিংহে জামায়াতের সেক্রেটারি

স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচানের সময় দীর্ঘ হলে নতুন ষড়যন্ত্রের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনালের অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল বিভাগ যে পরিমাণ দলীয়করণ আর দুর্নীতিতে ডুবে গেছে, সবটা সংস্কার করা এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। রাষ্ট্রের পূর্ণ সংস্কার, একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসলে তার দ্বারাই হবে। তবে আমরা বলেছি, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমপক্ষে রাষ্ট্রের যে সমস্ত বিভাগ সংস্কার করা প্রয়োজন, যেমন নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সিভিল প্রশাসন, এ রকম নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫/৭টি বিভাগকে সংস্কার করে ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। তারপরে নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা বলেছি ঘোষণা করুন। কারণ দীর্ঘ সময় নেওয়া হলে বিজেপি শাসিত সরকার সেখান থেকে নতুন ষড়যন্ত্র করতে পারে।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার আরকে উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মলেনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গোলাম পরওয়ার বলেন, খুব সক্ষেপণ যেমন সম্ভব নয়, তেমনি লম্বা সময়েরও প্রয়োজন নেই। মাঝামাঝি ন্যূনতম সংস্কারে যতটুকু সময় প্রয়োজন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অন্তর্বর্তী সরকারকে সে সময় দিতে রাছি আছি। কারণ কোনো সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আবারও ১৪, ১৮ ও ২৪ এর মতো হবে। এটা করে লাভ কী। যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশায় ১৮ বছর পার করলাম, ২ মাস সময় দেরি করেও যদি নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়। আমরা সে নির্বাচনই চাই। ইতোমধ্যে কিছু কিছু লোক পাগল হয়ে গেছে, ওরা চায় কাল ভোট হলেই ভালো হয়। দরকার কি, তুমি তো ১৫ বছর ধৈর্য্য ধরেছো, আরও একটু ধৈর্য্য ধরলে সেই নির্বাচনটা হোক যে নির্বাচনে সবাই খুশি হয়। এতো তাড়াহুড়ার মধ্যে আমরা কোনো সৎ উদ্দেশ্য দেখি না, অসৎ উদ্দেশ্যই দেখা যায়। একটু সবর করেন, ভোট হলে জনগণ যাকে ভোট দিবে, সেই ক্ষমতায় যাবে।

তিনি আরও বলেন,পতিত ফ্যাসিবাদ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা আমাদের নেতাদের ফাঁসি দিতে গিয়ে মিথ্যা মামলা, মিথ্যা এজাহার, মিথ্যা বাদী, মিথ্যা সাক্ষী দেওয়া লাগছে। আর তোমার ফাঁসির জন্য মিথ্যা মামলা, মিথ্যা সাক্ষী লাগবে না, সত্য সাক্ষী দিয়ে তোমাকে একশ বার ফাঁসি দেওয়া সম্ভব হবে। কোনো ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না, আপনি এই জুলাই অভ্যুত্থানের পর পাল্টা কু করার চেষ্টা করলেন। আপনি জুডিশিয়ালি কু করে বিচারপতিদেরকে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বাতিলের চেষ্টা করলেন। আপনি আনসারকাণ্ড, সচিবালয় ঘেরাও, এ দাবি-সেই দাবি, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ আমার প্রিয় সকল ধর্মের ভাইদেরকে উসকে দিয়ে অরাজকতা করার চেষ্টা করলেন। এখনও সেই চেষ্টা আপনি করছেন, সচিবালয়ে আগুন দিয়ে দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো লাভ নেই।

জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, আজকের এই অস্থিরতা ও অরাজকতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ জাতীয় ঐক্যের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। নিশ্চয়ই আমাদের নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে আমাদের সোনার সন্তানেরা রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে ঋণী করে গেছেন। এ রক্তের দায়, রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। বাংলার লক্ষ কোটি মানুষ জুলাই অভ্যুত্থানকে গ্রহণ করেছে, ওই আবু সাঈদ, মুগ্ধের মতো ফ্যাসিবাদের সামনে বুক পেতে দিয়ে ফ্যাসিবাদের পরাজয় বাংলাদেশকে বিজয়ী করেছে, প্রয়োজন হলে আরও লক্ষ আবু সাঈদ মুগ্ধরা আবার রক্ত দিয়ে তোমাদেরকে মোকাবিলা করবে।

কর্মী সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর মুক্তাগাছা উপজেলা শাখার আমির অধ্যাপক মো. শামছুল হকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ মহানগরীর আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য ও ঢাকা উত্তর মহানগর আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পরিচালক ড. সামিউল হক ফারুকী, ময়মনসিংহ জেলা শাখার আমির আব্দুল করিম, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, মুক্তাগাছা পৌর জামায়াতের আমির আফতাবুর রহমান আকন্দ প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন মুক্তাগাছা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ মুজাহিদ। কর্মী সম্মলনে উপজেলার হাজারো কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *