বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৪
ময়মনসিংহলীড নিউজ

‘সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও সার্বিক কল্যাণে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে কল্যাণ ট্রাস্ট’ : আবদুল্লাহ

মোঃ রাসেল হোসেন : বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেছেন, সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও সার্বিক কল্যাণে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে কল্যাণ ট্রাস্ট। বিপন্ন অসহায় সাংবাদিক ও তাঁদের পরিবারের পাশে থাকবে ট্রাস্ট। স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্নে কোন আপস করা হবে না। ট্রাস্টের সহায়তা প্রকৃতভাবে যারা প্রাপ্য তারাই পাবে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে ট্রাস্টের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের জেলা সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহ যৌথভাবে ‘সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও কল্যাণে করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য ও বিএফইউজে’র নেতা শাহীন হাসনাত, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সভাপতি আইয়ুব আলী, যুগ্ম সম্পাদক আমান উল্লাহ আকন্দ জাহাঙ্গীর, এখন টিভির ব্যুরো চীফ হারুনুর রশিদ, যমুনা টিভির ব্যুরো চীফ এস এম হোসাইন শাহীদ, মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার মতিউল আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এটিএন বাংলার সাংবাদিক শাহ আলম উজ্জল ও ইনকিলাবের ঈশ্বরগঞ্জের সাংবাদিক আতাউর রহমান। অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ বিভাগের ২০ জন সাংবাদিকের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে বর্তমান সরকার বিশেষতঃ মাননীয় তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ইতোমধ্যে বহুমুখী কল্যাণ ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন নতুন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। সাংবাদিকদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অস্বচ্ছল প্রবীণ সাংবাদিকদের মাসিক ভাতার আওতায় আনার কাজ চলছে। এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাস্ট। পেশাদার সাংবাদিকদের একটি ডাটা ব্যাংক গড়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে। এতে নতুন নতুন কল্যাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজতর হবে। এম আবদুল্লাহ বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতায় এখন আর কোন অন্তরায় সৃষ্টি করা হচ্ছে না। সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশনে বিটিভির সংবাদ প্রচারের যে বাধ্যবাধকতা ছিল তাও তুলে নেওয়া হয়েছে। টিভি টকশোতে কে থাকবেন আর কে থাকবেন না, তা এখন আর নির্ধারণ করে দেওয়া হয় না। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের তল্পিবহন করে যারা সাংবাদিকতাকে কলুষিত করেছে, সাংবাদিক সমাজকে জনসাধারণের কাছে হেয় করেছে তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, ট্রাস্টের নীতিমালা অনুযায়ী যারা আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য তাদের কেউ আবেদন করলে বঞ্চিত হবেন না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর ৪০ দিনের মাথায় ৩৫০ জন সাংবাদিককে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণকারি ৩০ জন সাংবাদিকের পরিবার ও ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, ডায়ালোসিসসহ জটিল রোগে আক্রান্ত ১০০ সাংবাদিককে চিকিৎসার জন্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এসব সহায়তার জন্য এখন কোনো ধরণের তদবির করতে হয়না। সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য বৃত্তি প্রদানের উদ্যোগও গ্রহণ করেছে কল্যাণ ট্রাস্ট।

কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য শাহীন হাসনাত বলেছেন, মানুষের মর্যাদা ও সাংবাদিকদের মর্যাদা অভিন্ন। তাই পেশাদারিত্বের সাথে মর্যাদা রক্ষায় সাংবাদিকদের সচেষ্ট থাকতে হবে। তথ্য গোপন করে অসত্য তথ্য দিয়ে জেনেশুনে মিথ্যার মিশ্রণ সাংবাদিকতার পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম বলেন, সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রণ করবেন না। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের লালন এই নীতি অনুসরণ করলে দেশে কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে না। নতুন বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিবাদ থাকবে না। বিভক্তি নয়, ঐক্যের জন্য সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাংবাদিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *