মঙ্গলবার, মে ৬, ২০২৫
মঙ্গলবার, মে ৬, ২০২৫

জামালপুরে একাডেমিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আটক

জামালপুর সংবাদদাতা : জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে মাসুদ রানা (২৪) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম।

আটক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানা সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ওই বিভাগের ছাত্রলীগের আহ্বায়ক। এর আগে সোমবার (৫ মে) পরীক্ষা শেষে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানা সোমবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক লিটন আকন্দসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভাগের পরীক্ষা দিতে হলে উপস্থিত হন। এ সময় পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের কাছে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানাকে কক্ষ থেকে বের করে দিতে বলেন। অধ্যপক ড. মাহবুবুর রহমান শিক্ষার্থীদের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা ছাত্রলীগ নেতা মাসুদকে নিয়ে একাডেমিক ভবনের সামনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাসে উঠিয়ে দিতে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং ছত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সমনে এনে একটি অটো বাইকে উঠিয়ে দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিয়ে অটো বাইকটি থামিয়ে তাকে আটক করে। আটক করে তাকে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে মেলান্দাহ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ও জাবিপ্রবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা অরাজকতা সৃষ্টি করত। তার বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া সহ আন্দোলনের বিপক্ষে গিয়ে স্বৈরাচারী সরকারকে ঠেকাতে নানা কর্মসূচি করেছে।

শিক্ষার্থীরা বলে, তাকে ক্যাম্পাসে আসতেই দেখিনি সে কিভাবে পরীক্ষা দেয়। যেখানে আমাদের ৬০ শতাংশের নিচে উপস্থিতি থাকেল পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম নেই। অবশ্যই তার বিভাগের শিক্ষকদের হাত আছে।

সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অলিউল্লাহ্ চৌধুরী বলেন, এর আগে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছে সেই ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষা নেওয়ার জন্য মত দেয়। পরবর্তীতে তারা দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের এ সব পরীক্ষা বাতিল হবে। এভাবেই তাদের পরীক্ষার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ বিবেচনায় কিছু শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। উপস্থিতর হারের বিষয়ে কোর্স টিচাররাই ভালো জানেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাদীকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা তাকে পরীক্ষা না দিতে দিলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় বাইরে একটি অটোতে উঠিয়ে দেই। পরবর্তীতে অটো বাইকটি থেকে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে এবং জুতার মালা পরানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশের সোপর্দ করে। এর কিছু সময় পর পরীক্ষা শেষে তার ক্লাসমেটরা তার বিষয়ে সুপারিশ করতে আসে এবং তাকে পুলিশ থেকে ছাড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতা মাসুদ রানা নামে একজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *