উপজেলা চত্বরে বইয়ের খোপ পাঠকদের ব্যাপক সাড়া
ঈশ্বরগঞ্জ সংবাদদাতা : গাছে ও খুঁটিতে ঝুলছে কাঠের ছোট ছোট বাক্স। দেখতে ঠিক পাখির বাসার মতো, তবে ভেতরে পাখির পরিবর্তে সাজানো আছে নানা ধরনের বই। যে কেউ চাইলেই সেখান থেকে বই নিয়ে পড়তে পারেন। পড়া শেষে আবার আগের জায়গায় রেখে যাওয়ার নিয়ম।
এমন দৃশ্য আগে দেখা যেত বিদেশের কোনো দেশে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে অনেকেই আফসোস করতেন। কিন্তু এখন সে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চত্বরে।
এ বুককেসগুলো স্থাপন করেছে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার। তিনি একজন বইপ্রেমী। উপজেলা পরিষদে নানান সেবা নিতে আসা মানুষের অপেক্ষমান ক্লান্তি কাটাতে তিনি ওই উদ্যোগ নিয়েছেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে বুককেসগুলো উদ্বোধন করার সাথে সাথে ব্যাপক সাড়া ফেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে।
নানা ধরনের বই দিয়ে সাজানো হয়েছে বুককেসগুলো।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদে আসা সব বয়সের মানুষই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। হাতে নিয়ে বই পড়ছেন অনেকে। কেউ কেউ না পড়লেও, অন্তত হাতে নিয়ে দেখছেন বইগুলো।
বুককেসের নিচে একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়া আছে। সেখানে লেখা আছে, ‘এখান থেকে বই পড়ুন, পড়া হলে যত্ন করে বুককেসে রেখে দিন।
একটি বুককেস থেকে বই নিয়ে পড়ছিলেন আয়শা আক্তার। তিনি বললেন, এ উদ্যোগটি তার অসম্ভব ভালো লেগেছে।
আমার যে কী খুশি লাগছে, আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারবো না। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট হলেও বই পড়ব৷ না পড়লেও চমৎকার এসব বইয়ের কাছাকাছি থাকতে ভালো লাগবে,’ বললেন আয়শা।
ঝুলন্ত ছোট ছোট বুককেসগুলো অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করছে। সারমিনা সাত্তার বলেন, ছোট বুককেস করার কারণ হলো এর ফলে সহজে মানুষের হাতের কাছে বই পৌঁছে দেয়া।
তিনি আরো বলেন, লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ার মত মানসিক শান্তি হয়তো অনেকের থাকে না। আমার মনে হলো, মানুষের হাতের কাছে যদি বইকে পৌঁছে দেওয়া যায়, তাহলে মানুষ বই পড়বে। যাদের অভ্যাস নাই, তারাও অন্যদের পড়তে দেখে আগ্রহী হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বরণ্য কবি সোহরাব পাশা। তিনি বলেন, একমাত্র বই-ই হচ্ছে মানুষের প্রকৃত বন্ধু। বই মানুষকে মানুষ হতে শেখায়। বই যদি কারো সঙ্গী হয় সে কোনদিন পথ হারাবে না।