প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় ঐক্য গঠনের আহ্বান বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে দেশের শান্তি বিনষ্টকারী শক্তিকে প্রতিহত করতে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐক্য গঠনে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত কয়েকদিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে উদ্বেগ— সেই উদ্বেগের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানাতে এসেছি। আমরা আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা এই বিষয়ে দ্রুত ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের ব্যবস্থা করবেন। দেশে যেন এমন কোনও ধরনের অবস্থা সৃষ্টি না হয়, যাতে বিভাজন সৃষ্টি হয়।
জাতীয় ঐক্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, অথবা স্টেবেলিটি বিনষ্ট করতে চায়— তাদের প্রতিহত ও প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এই কথাগুলো আমরা বলে এসেছি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা সেই সঙ্গে জনগণের যে দুর্ভোগ হচ্ছে, বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি হয়েছে— এ বিষয়ে তাদের সামনে তুলে ধরেছি। টিসিবির ট্রাকগুলো বাড়ানোর কথা বলেছি, এলাকাভিত্তিক বাড়ানোর কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আমরা ট্রাক চলাচল, যানবাহন যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করে সেটা বলেছি। সেই সঙ্গে কৃষিতে বিশেষ করে সার বিতরণের ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো আছে— সেই সমস্যাগুলো এখনও ফ্যাসিস্টদের দোসররা নিয়ন্ত্রণ করছে। আমরা এক্ষেত্রে যারা জনগণের পক্ষে আছে, তাদের এখানে নিয়ে আসার কথা বলেছি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, নরমাল যে অ্যাক্টিভিটিস আছে সেটা যেন চালু থাকে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের বেতনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি না হয়। তারা যেন নিয়মিত বেতন পান, সেজন্য সরকারকে ঋণ দেওয়া ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আরেকটা বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বলেছি— ইউনিয়ন পরিষদ যেগুলো আছে সেগুলো বেশিরভাগ ফ্যাসিস্ট সরকারের জোরজবদস্তি নির্বাচনে তাদের মতো করে নিয়ে এসেছিল। আমরা মনে করি, যেহেতু সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এখন ইউপি পরিষদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী নির্বাচন দিতে হবে।
ট্রেড বডি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ট্রেড বডিগুলো ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন ট্রেডবডি গঠন করতে হবে। সামগ্রিকভাবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐক্য গঠন করার আহ্বান জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা এটা বলেছি যে, সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নির্বাচন সংস্কারগুলো সম্পূর্ণ করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা অত্যন্ত জরুরি।