মঙ্গলবার, জুন ২৪, ২০২৫
মঙ্গলবার, জুন ২৪, ২০২৫

কসোভোতে আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুবিধা বাড়ানোর অনুরোধ প্রধান উপদেষ্টার

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ হয়। এসময় প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তার নিয়োগের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশে তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা মানবিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে কসোভোর বিভিন্ন খাতে আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুবিধা বাড়ানোর অনুরোধ জানান।

তিনি কসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন এবং এ লক্ষ্যে স্কলারশিপ, ফেলোশিপ ও একাডেমিক অনুদান চালুর আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর চেতনার কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের অবিচল অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন।

জবাবে রাষ্ট্রদূত প্লানা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি কসোভোকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে কসোভোতে সশস্ত্র সংঘর্ষ পরবর্তী সময়ের কথা স্মরণ করে বলেন, গ্রামীণ কসোভো আমাদের জাতিকে জীবনের পথে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে একটি মূল্যবান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি। আমি আপনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগ আমাদের জাতির জন্য বড় একটি সহায়তা। কসোভো যুদ্ধোত্তর সময়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী হিসেবে বাংলাদেশি সেনাদের অবদান ও সহায়তার জন্যও আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।

১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কসোভো বর্তমানে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যা ২০টি পৌরসভা ও ২১৯টি গ্রামে কাজ করছে। তাদের ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই নারী। এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছে বাংলাদেশের গ্রামীণ ট্রাস্ট।

চ্যালেঞ্জপূর্ণ সেই সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের জন্য এটা ছিল একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমরা যখন সেখানে পৌঁছাই, তখন অঞ্চলটি ছিল পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত। পুরুষরা তখনো ঘরে ফেরেনি, কোনো মুদ্রা ছিল না, কোনো ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল না। সেই শূন্য থেকে আমরা গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করি।

সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা পোষাকশিল্প, ওষুধ শিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংসহ কয়েকটি সম্ভাবনাময় খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

তিনি কসোভোর ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত প্লানা দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বণিকসভাগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *