বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫

পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বিদেশী সবজির চাষ করছেন বাকৃবি

বাকৃবি প্রতিনিধি : স্যাভয় ক্যাবেজ বাংলাদেশে একদম নতুন একটি শীতকালীন সবজি। এটি বাঁধাকপির একটি জাত, যার বিশেষ গুণ হলো এটি খুব মচমচে ও ভিন্ন ধরনের। সাধারণ বাঁধাকপি যেমন পরিপক্ক হলে শক্ত হয় কিন্তু স্যাভয় ক্যাবেজের পাতাগুলো মচমচে হওয়ায় রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি কাঁচা অবস্থায় ও স্যুপ করে খেলেও অত্যন্ত সুস্বাদু লাগে। বিভিন্ন ফাস্ট ফুড, যেমন বার্গার, স্যান্ডউইচ ইত্যাদির সঙ্গে খাওয়া যায়। এছাড়া এর চাষাবাদ, পুষ্টি গুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছেন উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ।

গবেষণায় দেখা গেছে স্যাভয় ক্যাবেজে আইসোথায়োসায়ানাইড থাকে যেটি ফুসফুসের ক্যান্সার ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত কমায় বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক হারুন।
পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, ভিটামিন সি এর পাশাপাশি এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে যা মানুষের স্বাভাবিক হার্টবিট বজায় রাখতে এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ ও স্ট্রোক কমাতে সাহায্য করে। এতে বিদ্যমান ফোলেট ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বাচ্চাদের মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করে।

এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, সি, ফলেট ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। ফলেট থাকায় এটি হৃদরোগ কমাতে সাহায্য করে। ওমেগা ৩ বাচ্চাদের হাড় গঠন, শরীর বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশে সাহায্য করে। তাছাড়া এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে ও রয়েছে ন্যাচারাল অ্যান্টিহিস্টামিন, যা অ্যালার্জি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
তাছাড়া এটি ওয়েটলস ড্রিংকস হিসেবে খাওয়া যায় যা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি একই সাথে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সহায়ক বলেও জানান তিনি।

বিদ্যমান ভিটামিন সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, সাধারণত সবুজ শাকসবজিতে বিটা ক্যারোটিন থাকে, কিন্তু স্যাভয় ক্যাবেজে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন থাকে এবং এটি ভিটামিন এ এর অন্যতম উৎস।
অধ্যাপক হারুনের এই গবেষণা দলে সহযোগী হিসেবে যুক্ত আছে মাস্টার্স এর শিক্ষার্থী সাদিয়া রহমান মাইশা।
অধ্যাপক হারুন বলেন, জৈব মালচিং পদ্ধতিতে আমরা এই স্যাভয় ক্যাবেজ চাষ করেছি। এটি আমরা ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে এসেছি। কিন্তু এর নামটি এসেছে ফ্রান্সের একটি জায়গার নাম থেকে। ইতালিতে একে মিলান ক্যাবেজ বলা হয়।

এর ফলন সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, স্যাভয় ক্যাবেজের আরেকটি বিশেষত্ব হল এর মাথার ওজনই দেড় থেকে দুই কেজি এবং পাতা সহ ওজন প্রায় তিন কেজি।

অধ্যাপক বলেন, এর চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য ক্যাবেজের মতোই। গবেষণা প্লটে ২৫ দিনের চারা চাষ করেছি। চারা লাগানো থেকে হারভেস্টিং পর্যন্ত সময় লেগেছে ২ মাস। সাধারণ ক্যাভেজের তুলনায় এর ফলন বেশি। ম্যাচিউর হওয়ার পরও সতেজ ও মচমচে থাকায় এর পাতাও পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

এ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ নতুন সবজিটি চাষাবাদের জন্য কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য বলে জানান অধ্যাপক হারুন অর রশিদ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *