গাজায় ইসরায়েলের মৃত্যুফাঁদ, ত্রাণ নিতে গিয়ে এক মাসে নিহত ৫৪৯
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অনেকেই খাবারের সন্ধানে বেরিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) কুয়েত ফিল্ড হাসপাতাল সূত্রে আল-জাজিরা জানিয়েছে, রাফাহের উত্তরে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর একটি ত্রাণকেন্দ্রের পাশে ইসরায়েলি গুলিতে অন্তত ছয়জন প্রাণ হারান।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত এক মাসে কেবল ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৫৪৯ জন নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনা ঘটেছে জিএইচএফের বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশেই।
‘সাহায্যের নামে হত্যাযজ্ঞ’
বহুজাতিক চিকিৎসাসেবী সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত জিএইচএফ প্রকল্পটি বাস্তবে ‘মানবিক সাহায্যের নামে গণহত্যা’। তারা এই পরিকল্পনাকে ‘সাহায্যের ছদ্মবেশে নৃশংসতা’ হিসেবে বর্ণনা করে অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
এমএসএফ আরও বলেছে, এই কাঠামোটি ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনিদের অপমান করছে, যেখানে মানুষকে বেছে নিতে বলা হচ্ছে—ক্ষুধায় মরবে, না কি গুলি খেয়ে?
বাড়ছে আন্তর্জাতিক সমালোচনা
জিএইচএফ নামের এই বিতর্কিত সংগঠনটি বর্তমানে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রধান সরবরাহকারী হলেও জাতিসংঘসহ বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা তাদের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সমালোচকদের অভিযোগ, সংগঠনটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভাড়াটে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় কাজ করছে। ফলে, ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষই প্রতিদিন গুলির মুখে পড়ছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ হিসাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার ২৫৯ জন নিহত এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ, যাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই ধরে নেওয়া হয়।