বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫

উন্নত রাষ্ট্র গড়তে তরুণদের মাদকমুক্ত রাখার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যেকোনো দেশের উন্নতির প্রধান শক্তি হলো কর্মক্ষম যুবসমাজ। আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় দক্ষ যুবশক্তিই একটি দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যখনই বৈষম্য, বঞ্চনা, অবিচার এবং মূল্যবোধের সংকট তৈরি হয়েছে, তখনই যুবসমাজ সংকল্প ও ঐক্যের মাধ্যমে তা প্রতিহত করেছে। জুলাইয়ের ছাত্র-যুব-জনতার গণঅভ্যুত্থান তারুণ্যেরই বিজয়। উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে হলে তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদকমুক্ত রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আতঙ্কের নাম ‘মব জাস্টিস’, ভয়ে আছেন সাবেক আমলাসহ অনেকে
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, মাদক চোরাচালানে নারী, শিশু ও কিশোরদের ব্যবহার একটি ভয়াবহ সামাজিক সংকট হয়ে উঠেছে। এর ফলে শুধু অপরাধপ্রবণতা নয়, তাদের মধ্যে মাদকাসক্তিও দ্রুত বাড়ছে। এ সমস্যা সমাধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে।

নতুন মাদকের হুমকি ও করণীয় প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আন্তর্জাতিক মাদকবাজারে নতুন ধরনের সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগস ছড়িয়ে পড়ছে বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। এসব মাদক মোকাবিলায় আইনের আওতায় আনা ও কৌশলগত নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।

তিনি জানান, মাদকবিরোধী অভিযান আরও কার্যকর করতে সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৪ প্রণয়ন করেছে। এর আওতায় প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে আভিযানিক ঝুঁকি কমবে এবং কার্যকারিতা বাড়বে।

উপদেষ্টা বলেন, একনেকে অনুমোদিত ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে সাতটি বিভাগীয় শহরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মিত হবে। পাশাপাশি মাদকাসক্তদের জন্য পৃথক কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে। এটি একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। তাই মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী বলেন, যে পরিবারের সদস্য মাদকাসক্ত হয়, কেবল তারাই এর গভীরতা, ভয়াবহতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বুঝতে পারে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, মাদকের উৎপাদন বাংলাদেশে হয় না। পাশ্ববর্তী দেশসমূহ থেকে পাচারের মাধ্যমে আমাদের দেশে এসে এটি যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। আর এটিকে সফল করতে হলে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে এবং জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী কার্যক্রমের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *