সোমবার, জুন ২, ২০২৫
সোমবার, জুন ২, ২০২৫

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী ইন্দোনেশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ইন্দোনেশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরমানাথা ক্রিস্টিয়াওয়ান নাসির বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, জাকার্তা ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে আগ্রহী।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে পারস্পরিক আগ্রহের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা, যিনি দায়িত্ব গ্রহণের আগে একাধিকবার ইন্দোনেশিয়া সফর করেছেন, দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐক্য থাকা সত্ত্বেও ঢাকা ও জাকার্তার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেনি।

অধ্যাপক ইউনূস সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাসহ দুই দেশের জনগণের মধ্যে আরও বেশি যোগাযোগ গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আমরা যথাসাধ্য উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত।’

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একমত পোষণ করে উপমন্ত্রী নাসির জানান, ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে এবং বাংলাদেশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ইন্দোনেশিয়ার কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশিক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশিদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য যেমন বালিতে ভিসামুক্ত ভ্রমণের প্রস্তাব দেন, যা দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে।

নাসির জানান, বাংলাদেশকে আসিয়ানের খাতভিত্তিক সংলাপে অংশীদার হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় ইন্দোনেশিয়া সমর্থন দেবে।

অধ্যাপক ইউনূস এই সমর্থনকে স্বাগত জানান এবং বলেন, এটি ভবিষ্যতে আসিয়ানের পূর্ণ সদস্যপদ অর্জনের পথ সুগম করবে। তিনি এই প্রচেষ্টায় ইন্দোনেশিয়ার অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন।

ইন্দোনেশিয়ার উপমন্ত্রী বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অধিকারী হিসেবে অভিহিত করেন।

ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা নাসির বলেন, বাংলাদেশ থেকে চতুর্থ সর্বোচ্চ পণ্য আমদানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া।

তিনি জানান, ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল, উৎপাদন ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাকার্তার সহায়তা কামনা করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ইন্দোনেশিয়া আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলনে (চলতি সেপ্টেম্বর মাসে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠাতব্য) সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

নাসির আশ্বাস দেন যে ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের উদ্বেগকে অনুভব করে এবং মানবিক এই সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *