সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের সূচনা’ ঘোষণা, প্রতিশোধ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়ার স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং সিরিয়া এখন মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে দেশটির বিদ্রোহীরা। এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্স সিরিয়ার দুইজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানান, প্রেসিডেন্ট আসাদ অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে গেছেন।
এই অবস্থায় সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের সূচনা’ ঘোষণা দিয়েছেন বিরোধীরা। একইসঙ্গে প্রতিশোধ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তারা। রোববার (৮ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি তার লাইভ আপডেটে জানিয়েছে, সশস্ত্র বিরোধী দল বলছে— “নতুন সিরিয়া” হবে “শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের” স্থান, যেখানে ন্যায়বিচারের জয় হবে এবং সমস্ত সিরিয়ানদের মর্যাদা রক্ষা করা হবে।
বিদ্রোহীরা এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছি।”
সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী দল বলছে আল-আসাদের সরকারের অবসান সিরিয়ার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামের একটি ইসলামিক সশস্ত্র গোষ্ঠী এই অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছে এবং তারা তাদের টেলিগ্রাম হ্যান্ডেলে বলেছে, এর মাধ্যমে একটি অন্ধকার যুগের অবসান ঘটল এবং একইসঙ্গে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটেছে।
এছাড়া দামেস্কের পথে পথে ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে উল্লাস করতে দেখা গেছে।
বিদ্রোহীরা এক বিবৃতিতে বলেছে, “বাথিস্ট শাসনের অধীনে ৫০ বছরের নিপীড়ন এবং ১৩ বছরের অপরাধ, অত্যাচার এবং বাস্তুচ্যুতি ও দীর্ঘ সংগ্রামের পরে, সমস্ত ধরনের দখলদার বাহিনীর মোকাবিলা করার পরে আমরা আজ ৮ ডিসেম্বর সেই অন্ধকার যুগের সমাপ্তি এবং সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করছি।”
বিদ্রোহীরা বলছে, আসাদ সরকারের নিপীড়নের শিকার শত শত মানুষ যারা কারাবন্দি ও বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন তারা এখন নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারেন।
এদিকে রাজধানীর সবচেয়ে বড় কারাগার সেদনায়া থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্ত করেছে বিদ্রোহীরা। এছাড়া সিরিয়া বিভিন্ন শহর থেকে হেজবুল্লাহ বাহিনী তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করেছে। এই পরিস্থিতিকে একজন বিশ্লেষক “৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের চূড়ান্ত মূহুর্ত” হিসেবে বিবিসির কাছে বর্ণনা করেছেন।
বিদ্রোহীরা দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছে— এমন ঘোষণা দেওয়ার পরপর প্রেসিডেন্টের দেশ ছাড়ার খবর পাওয়া যায়, কিন্তু শুরুতে সে খবর অস্বীকার করা হয়েছিল। তবে আসাদ চলে যাওয়ার পর বিমানবন্দর থেকে সরকারি বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।