রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
আইন ও আদালতলীড নিউজ

শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

একইসঙ্গে এ দুই মাধ্যমে পলাতক শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

জানা গেছে, আজ থেকেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এসবের বাইরে তার সাধারণ কোনো বক্তব্য প্রচারে বাধা নেই বলেও জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আদালতের আদেশের বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের করা একটি মামলার আসামি শেখ হাসিনার কিছু বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। যেখানে কিছু বক্তব্যের মধ্যে আমরা শুনতে পেয়েছি তিনি বলেছেন, তার নামে যেহেতু ২২৭টি মামলা হয়েছে তাই তিনি ২২৭টি মার্ডার করার সার্টিফিকেট পেয়েছেন। তিনি আরও বলছেন, তোমাদের যে বাড়িঘর পোড়াচ্ছে, তাদের কি বাড়িঘর নাই। তিনি এই শব্দগুলো ব্যবহার করে এই মামলার ভিকটিমদের এক ধরনের থ্রেট দিয়েছেন।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম আরও বলেন, যেসব ভুক্তভোগী এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাদের কিন্তু বিচারকের সামনে সাক্ষ্য দিতে হয়। এ ধরনের বক্তব্য যদি প্রকাশ হয় তাহলে আমরা সাক্ষীদের আর ট্রাইব্যুনালে এনে সাক্ষ্য নিতে পারব না। এছাড়া যেসব স্থানে এ সাক্ষীরা আছেন সেখানে গিয়ে তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত কর্মীরা তাদের কাছ থেকে সাক্ষ্য নিতে পারবেন না।

তিনি আরও বলেন, হেট স্পিচ এমন একটি অপরাধ, যেটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের নয় সারা পৃথিবীর সব আইনেই এটি ক্রিমিনাল অফেন্স। যেটি বর্তমানে করা হচ্ছে, তা বন্ধের জন্য এবং ভবিষ্যতের পাবলিকেশন বন্ধের জন্য এবং ইতোমধ্যে যে হেট স্পিচগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে আছে সেগুলো মুছে ফেলার জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম। চেয়ারম্যান ও বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার আমাদের আবেদনটি শুনেছেন। পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালের আইন শুনেছেন। আন্তর্জাতিক আইনগুলো শুনেছেন। একই সঙ্গে বর্তমান আইনগুলো শুনেছেন। এ আইনগুলো শুনে আদালত আমাদের আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন। পাশাপাশি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন, যে সকল হেট স্পিচ এখনো বিদ্যমান আছে সেগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য। আর ভবিষ্যতে যেন এ ধরণের হেট স্পিচগুলো আর প্রচার না হয় সে বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন।

গাজী এম এইচ তামীম বলেন, আমরা আজকের এই আবেদনটি করেছিলাম শুধু একজন আসামির ক্ষেত্রে, সেটা হচ্ছে শেখ হাসিনা। কারণ এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে শুধু উনার হেট স্পিচগুলো আছে। শুধুমাত্র শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও এমন বক্তব্য যা ট্রাইব্যুনালের ইনভেস্টিগেশনে বাধাগ্রস্ত হয় এই ধরনের প্রচারণা বন্ধ চেয়ে আবেদন করেছি। আজ থেকেই এই আদেশ পালনের কথা আদালত বলেছেন।

জাতিসংঘ থেকে বলা আছে, কোন স্পিচ গুলো হেট স্পিচ আর কোনগুলো সাধারণ। এমন ছয়টি নির্দেশনা দেওয়া আছে। আর এই ছয়টি বিষয়ই কাভার করে শেখ হাসিনা যে বক্তব্যগুলো দিয়েছেন। এর বাইরে শেখ হাসিনার কোনো সাধারণ বক্তব্য প্রচারে নিষেধ নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *