বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
জামালপুরলীড নিউজ

জামালপুর হাসপাতালের সড়কে নেই ব্রিজ, নড়বড়ে সাঁকোয় পারাপার

জামালপুর সংবাদদাতা : আব্দুল আজিজ (৬৫)। তিনি অসুস্থ। একা একা চলতে পারেন না। নিতে হয় অন্যের সাহায্য। তাকেও চিকিৎসার জন্য পাড়ি দিতে হচ্ছে জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকো। আব্দুল আজিজই নন, তার মতো আরো অনেক রোগীকে এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়েই আসেন জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা।

জানা যায়, হাসপাতালটি পূর্বপার্শ্বে মরাখালের ওপর তৈরি দীর্ঘদিনের বাঁশের সাঁকোটির অবস্থা খুবই নাজুক। বর্তমানে এর খুঁটিগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে। কাঠের পাটাতনগুলো পচে গেছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারার করছেন শত শত মানুষ।

সাঁকোর পশ্চিম পাশে নগরীর প্রধান সড়ক ও হাসপাতাল। পূর্ব পাশে ফার্মেসি, এক্স-রে, ডায়াগনস্টিক, হোটেল রেস্তোরাঁ, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও লোকালয়। সবার চলাচলের একমাত্র পথ এ বাঁশের সাঁকো। এ সাঁকোর ওপর দিয়েই রোগীরা চিকিৎসা ও ওষুধ কিনতে যান। ডাক্তার-নার্সরা চা নাস্তা করতে যান। ওপারে ছেলে-মেয়েরা এপারে স্কুল কলেজে যায়। আবার এপারের ছেলে-মেয়েরা ওপারে মাদরাসায় যায়। অথচ চলাচলের জন্য এতো জনগুরুত্বপূর্ণ এই বাঁশের সাঁকোটি আজো পরিবর্তন হয়নি। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার করছে হাজারো মানুষ। চোখের সামনে এ জনদুর্ভোগ যেন কারো নজরেই পড়ছে না।

সাঁকোর ওপারে বসবাসকারী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ইমাম হাফেজ মাওলানা আল-আমিন বিন হাবিব বলেন, সাঁকোর ওপারে আমার বসবাস। এপারে কর্মস্থল। জীবনের প্রয়োজনে প্রতিদিনই আমাকে সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে সাঁকোটির অবস্থা খুবই নাজুক। খুঁটিগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে, কাঠ পচে গেছে। হাঁটতে গেলে কাঁপে, আমাদেরও ভয় করে। মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়ল। তাই এইখানে পাকা ব্রিজ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

কৃষক জুয়েল বলেন, সাঁকোর পূর্বপাশে আমার ছোট একটা চা পানের দোকান আছে। এখানে আমার মতো অনেকেরই বসবাস। আমাদের সবার যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন এই বাঁশের সাঁকো। আমরা চরবাসী ছাড়াও হাসপাতালে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীও এই সাঁকো ব্যবহার করে। তাই, আমাদের সবার স্বার্থে বাঁশের সাঁকোটির পরিবর্তে এখানে একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

আরেক হোটেল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে হাসপাতালের সামনে রাস্তার পাশে থাকা আমাদের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই আমরা মরাখালের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ওপারে ব্যবসা করে আসছি। এই সময়ের মধ্যে আমরা ব্যবসায়ী ও চরবাসী এখানে একটা ফুট ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। বিগত সরকারের আমলে অনুমোদন পেয়েছিল। সয়েল টেস্টসহ সব পরীক্ষা নিরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতার জোরে ব্রিজটি সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র নির্মাণ করেছেন। অথচ সেই জায়গার চাইতে এই জায়গাটি অতি-জনগুরুত্বপূর্ণ।

জামালপুর পৌর প্রশাসক মৌসুমি খানম বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *