সোমবার, এপ্রিল ৭, ২০২৫
সোমবার, এপ্রিল ৭, ২০২৫

জাতিসংঘে গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস

পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিগত দুই মাসে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থানের বিবরণ ও আগামী দিনে জনভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ্বদরবারে তুলে ধরবেন।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মলেনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যোগদান উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন। তিনি আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর অধিবেশন শেষে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্ক পর্বে বক্তব্য রাখবেন। বক্তব্যে তিনি বিগত দুই মাসে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থানের বিবরণ ও আগামী দিনে জনভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ্বদরবারে তুলে ধরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, বিশ্বব্যাপী সংঘাত, রোহিঙ্গা সংকট, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতিকূলতা, উন্নয়নশীল দেশসমূহ থেকে সম্পদ পাচার প্রতিরোধ, নিরাপদ অভিবাসন, অভিবাসীদের মৌলিক পরিষেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, জেনারেটিভ কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তর এবং ফিলিস্তিন সম্পর্কিত বিষয়সমূহ তার বক্তব্যে উঠে আসতে পারে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ কথা বলার অবকাশ রাখে না যে, প্রধান উপদেষ্টার পরিচিতি এবং সুনাম বিশ্বব্যাপী। এ কারণে অনেকগুলো বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা তার সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও সভায় অংশগ্রহণ করার জন্যও অনুরোধ এসেছে। যেহেতু তিনি মাত্র তিনদিন নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন, সেহেতু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এই স্বল্প সময়েরর মধ্যে সকলের অনুরোধ রক্ষা করা বেশ কঠিন।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ অধিবেশনে আমরা রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টও আয়োজন করছি। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কাজ শুরু করেছে। এ প্রেক্ষাপটে এবারের অধিবেশন নতুন বাংলাদেশের জন্য জাতিসংঘে বা বিশ্ব সভায় নতুন পদচারণা। এবারের অধিবেশনে আমাদের কাছে একটি বিরাট সুযোগ বিশ্বদরবারে এই বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশকে উপস্থাপনের জন্য।

তৌহিদ হোসেন জানান, জাতিসংঘের অগ্রাধিকার ইস্যুগুলো প্রত্যেকটি বাংলাদেশের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ইস্যুগুলোর ওপর যেসব ইভেন্ট আছে, বাংলাদেশ তার সব কয়টিতেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ বহুপাক্ষিক কূটনীতিকে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে মনে করে। সার্বিক বিবেচনায় এবারের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত ও সুদৃঢ় করবে আশা করা যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রসচিব এম জসীম উদ্দিন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইস্ট এশিয়া প্যাসিফিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক তৌফিক হাসান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *