বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
আলোচিত সংবাদজেলা সংবাদব্রেকিং নিউজ

সিলেটে আবারও বাড়ছে নদ-নদীর পানি

ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সিলেটের নদ-নদীর পানি (রোববার ৩০ জুন) সকাল ৬টা থেকে আবারও পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, (রোববার ৩০জুন) সকাল ৬টা থেকে তিন ঘণ্টা পর পর সিলেটের প্রায় সব নদীর পানি ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে সোমবার পর্যন্ত। তাই ভারতের পাহাড়ি ঢল বড় আকারে নামলে সিলেটে তৃতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বন্যা আতঙ্কে দিনযাপন করছেন সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন।

সিলেটে চলমান বন্যা পরিস্থিতি যখন উন্নতির দিকে যাচ্ছিল তখনই বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। (রোববার ৩০জুন) সকাল থেকে সব নদ-নদীর পানি প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর-অন্তর ৩-৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ২১ দশমিক ৬ মিলিমিটার।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত চেরাপুঞ্জিতে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে সিলেটের সবকটি নদ-নদীর পানি আবারও দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলার সুরমা, সারি, সারিগোয়াইন, পিয়াইন (ডাউকি), ধলাইসহ সব নদ-নদীর পানি রোববার সকাল থেকে বাড়তে শুরু করেছে। কুশিয়ারা নদীর এক পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, আতঙ্কে দিন কাটছে গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়ান নদীর কূলঘেষা জাফলং ইউনিয়নের নয়াগাঙ্গের পাড় এলাকার বাসিন্দাদের। গত বন্যায়ও এই এলাকার চারটি পরিবারের ঘরবাড়িসহ সবকিছু পানিতে তলিয়ে যায়। ওই এলাকার ময়না মিয়া বলেন, ঈদের সময় যে বন্যা হলো তাতে আমার ঘরসহ সবকিছু পানিতে তলিয়ে যায়। সব হারিয়ে আমার পরিবার এখন প্রায় নিঃস্ব। এখন নদীর পানি বাড়তে দেখলেই ভয় পাই।

গত দুই দফা বন্যায় বাড়িতে বুক সমান পানি ছিল কোম্পানীগঞ্জ সদর উপজেলার বুরদেও এলাকার বাসিন্দা নাসরিন আক্তারের। তিনি বলেন, গত দুই বন্যায় বাড়িতে বুক সমান পানি ছিল। ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। শুনেছি আবারও নদীতে ঢলের পানি নামছে। তাই কখন যে পানি এসে ঘরে ঢুকবে সেই আতঙ্কে আছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, সিলেটের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে সিলেট ও ভারতেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভারতের পাহাড়ি ঢলও আসছে। তাই রোববার সকাল থেকে জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট ছাড়া সব নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা করে তিনি আরও বলেন, দুই দফা বন্যায় সব হাওর-বাওর ও নদী ইতোমধ্যে পানিতে পরিপূর্ণ। নিম্নাঞ্চলে পানি নামার জায়গা নেই। তাই এখন যদি ভারতের পাহাড়ি ঢল নামে তাহলে তা আমাদের জন্য বিপদজ্জনক। তাই আবারও বন্যার ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *