জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে বাধা নেই
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জি এম কাদের) দায়িত্ব পালন নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রোববার (১২ মে) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে বাদী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রেজা। জি এম কাদেরর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজি উল্লাহ।
২০২২ সালের ৪ অক্টোবর জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলাটি করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাপার প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জালজালিয়াতির মাধ্যমে একই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করেন। তিনি নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
২০২২ সালের ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকারসহ কয়েকজনকে তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেন। একই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। আর ১৭ সেপ্টেম্বর তাকে (জিয়াউল হক মৃধা) জাপা থেকে বহিষ্কার করেন জি এম কাদের, যা অবৈধ।
এ মামলায় বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ও দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
পরে এই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে জি এম কাদের আবেদন করেন। ১৬ নভেম্বর তার আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে আপিল করেন তিনি। আপিলের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন রাখা হয়। এ অবস্থায় শুনানি এগিয়ে নেওয়ার জন্য জি এম কাদের আবেদন করেন, যা ২৪ নভেম্বর খারিজ হয়। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জি এম কাদের।
এর শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ স্থগিতাদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে জিয়াউল হক মৃধা আপিল বিভাগে যান। আপিল বিভাগ জিয়াউল হক মৃধার করা আবেদন নিষ্পত্তি করে ১৪ ডিসেম্বর আদেশ দেন। পাশাপাশি জেলা জজ আদালতে থাকা জি এম কাদেরের আপিল দ্রুত শুনানি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে জি এম কাদেরের বিবিধ আপিল জেলা জজ আদালতে ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি খারিজ হয়।
এ অবস্থায় গত বছরের ১৯ জানুয়ারি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জি এম কাদের। এই আবেদনের শুনানি নিয়ে একই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দিয়ে ১৯ জানুয়ারি জেলা জজের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন বাদী জিয়াউল হক মৃধা।
আইনজীবী অজি উল্লাহ জানান, এ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রইল। এ কারণে জি এম কাদেরের দলীয় দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা নেই।