আট গ্রামের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো
গফরগাঁওয়ের একটি ইউনিয়নের আটটি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। দীর্ঘ চার যুগেরও বেশি সময় ধরে এই সাঁকোটি ব্যবহার করছেন তারা। স্থানীয়রা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে খালের উপর সাঁকোটি নির্মাণ করে এবং এখন পর্যন্ত একই ভাবে এর মেরামত খরচ বহন করা হয়। গ্রামের শত শত মানুষ জনাকীর্ণ এই সাঁকোটি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছেন।
প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে জেনেও বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়ে পারাপার করতে হয় এই সাঁকো দিয়ে। যার ফলে এই এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো যানবাহন প্রবেশ করেনি। ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের অললি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আজমতি খালের উপর কদমতলী মোড়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র ।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় এক কলেজ শিক্ষক আরিফ বাশার জানান, নিগুয়ারী ইউনিয়নের আটটি গ্রামে প্রাই ১৫ হাজার মানুষের গফরগাঁও সদরে যাওয়ার একমাত্র চলার রাস্তাই হচ্ছে এই সড়কটি। এখানে সাত থেকে আটটি সরকারী এবং বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই রাস্তার বিকল্প অন্য কোনো রাস্তা না থাকায় প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শত শত লোক এই সেতু দিয়ে পারাপার হয়। কোমলমতি স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও ৭০-৮০ ঊর্ধ্বে বয়স্ক লোকেরা বেশি বিপাকে পড়ে।সাঁকোটি এখন এমন অবস্থায় আছে যে পায়ে হেটে পার হওয়াটাও এখন বিপদজনক। যেকোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক কোন দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা ৮ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।
নিগুয়ারী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য আবুল কাশেম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আমরা এই খালের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপার হয়ে আসছি। আগে সাঁকোটি ছিল একটি বাঁশের পরে দুটি বাঁশের। বর্তমানে আমরা নিজেরাই চাঁদা তুলে বাঁশ দিয়ে একটু বড় করে বানিয়েছি। বাঁশের সাঁকোটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ যে কোন সময় ভেঙ্গে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি কিন্তু এখন কোন ব্যবস্থা হয়নি।
কদমতলী মোড়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ওয়াদুদ মিয়া জানান, সেতুটি এই পর্যন্ত প্রায় ৩০-৪০ বার ভিবিন্ন কারনে ভেঙ্গে পড়েছে এতে অনেকেই দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছেন কারো হাত ভাঙ্গছে এই ভাবে অনেক লোক আহত হয়েছে।
অললি গ্রামের অটোচালক সৈয়দ হোসেন বলেন, সেতুটি দিয়ে হেটে পারাপার হতে পারলেও কোন যানবাহন চলতে পারে না। আমার অটোরিকশাটি খালের ওই পাড়ে রেখে আসতে হয় যার জন্য প্রতিদিন অটোরিকশা পাহারা দেয়ার জন্য ১০০ টাকা দিতে হয়।
এলাকার একজন অভিবাবক বলেন, বাচ্চারা সেতুটি পারাপারের ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না তাদেরকে অনেক জোর করে স্কুলে পাঠাতে হয়।
নিগুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন খান বলেন, সাঁকোটি সত্যি বিপদ জনক যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা আর এই সাঁকোটি ভেঙ্গে নতুন পোল নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজন প্রচুর টাকা আমি এমপি মহোদয়েকে বিষয়টি অবগত করেছি আশা করি খুব শীঘ্রই বিষয়টি বাস্তবায়ন হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ব্রিজ নির্মাণের জন্য খুব দ্রুত প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে মন্ত্রণালয় পাঠানো হবে।