বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৪৪ লাখ ছুঁইছুঁই
চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। একই সময়ে রোগটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছয় লাখ ৪৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
সর্বশেষ এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ কোটি ৯৩ লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অন্য দিকে করোনায় প্রাণ হারানোদের সংখ্যা এরই মধ্যে ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
বুধবার (১৮ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন নয় হাজার ৮৭৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে প্রায় দুই হাজার তিনশ। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪৯ জনে পৌঁছে গেছে।
এছাড়া একই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ছয় লাখ ৪৩ হাজার ৫৪৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে এক লাখ ২৫ হাজারের বেশি দাঁড়িয়েছে। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত মোট ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ২০ কোটি ৯৩ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
গত এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৩৬ হাজার ১৯২ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৮৭১ জন। মহামারি করোনার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৭৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯৯৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন ছয় লাখ ৪০ হাজার ৮৯ জন করোনা রোগী।
অন্য দিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখল দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১৮০ জন রোগী। আর নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৭৪১ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৪৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আর প্রাণ গেছে এক লাখ ২০ হাজার ১৩ জনের।
এ দিকে করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১৩৭ জন। আর নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৮ হাজার ২১৮ জন।
অপর দিকে মহামারি আঁকারে থাবা বসানোর পর দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি চার লাখ ১৭ হাজার ২০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ৭১৮ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। তবে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানোদের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৪০ জন। আর নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৫ হাজার ২০১ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত তিন কোটি ২২ লাখ ৮৫ হাজার ১০১ জন। এছাড়া চার লাখ ৩২ হাজার ৫৫২ জন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬২৫ জন। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৫০ হাজার ২২৮ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ২৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯৯ হাজার ১০৮ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬৫ লাখ চার হাজার ৯৭৮ জন, আর ৬৬ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৯ জন রাশিয়ায়, যুক্তরাজ্যে ৬৩ লাখ ২২ হাজার ২৪১ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬০৬ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৫০৮ জন, এছাড়া ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ৬০২ জন স্পেনে, জার্মানিতে ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ১৮৮ জন এবং ৩১ লাখ আট হাজার ৪৩৮ জন মেক্সিকোতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
অপর দিকে করোনায় সংক্রমিত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১২ হাজার ৮৬৪ জন, আর এক লাখ ৭২ হাজার ১১০ জন রাশিয়ায়, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ১৪৯ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৫১০ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৩ হাজার ৫০৭ জন, এছাড়া স্পেনে ৮২ হাজার ৭৩৯ জন, আর জার্মানিতে ৯২ হাজার ৪০৩ জন এবং দুই লাখ ৪৮ হাজার ৬৫২ জন মেক্সিকোতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সংস্থাটি।