বুধবার, জুন ৪, ২০২৫
বুধবার, জুন ৪, ২০২৫

হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু : লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত মিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। আরবি হিজরি সন ১৪৪৬ এর জিলহজ মাসের ৮ তারিখ আজ। আরবি বর্ষপঞ্জিকার শেষ মাস জিলহজের ৮ তারিখ মিনায় অবস্থানের মাধ্যমে শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর ৯ জিলহজ আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন হাজিরা। ১০ জিলহজে পশু কোরবানি করেন হাজিরা। পশু কোরবানি শেষে আরও দুইদিন থাকে হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা। হজ সম্পন্ন করতে সবমিলিয়ে সময় লাগে পাঁচদিন।

হাজিরা ৮ জিলহজ (বুধবার) ভোরে মক্কায় তাদের আবাসস্থল থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ‘ইয়াওমুত তারওয়িয়াহ’ বা তারওয়িয়াহ দিবস পালনের জন্য। এর মাধ্যমেই শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণে তাবুর শহর মিনায় গমনের সময় তালবিয়া পাঠ ও আল্লাহর জিকির ও তাসবিহে মশগুল থাকেন। এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ১৪ লাখ ৭০ হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক হাজিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কয়েক লাখ অভ্যন্তরীণ হাজি।

মক্কা ও পবিত্র স্থানসমূহের রাজকীয় কমিশনের সাধারণ পরিবহন কেন্দ্রের হজ ও ওমরাহ বিভাগের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আল-কারনি জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজিরা ইতোমধ্যেই মক্কায় পৌঁছেছেন এবং অভ্যন্তরীণ হাজিরাও মক্কায় এসে ‘তাওয়াফুল কুদূম’ সম্পন্ন করে মঙ্গলবার রাতেই মিনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ৩৬ দিন ধরে মক্কা ও মদিনায় আগমন করেছেন আন্তর্জাতিক হাজিরা। তাদের যাতায়াত ব্যবস্থায় এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের বিঘ্ন ঘটেনি। অভ্যন্তরীণ হাজিরা সোমবার রাত ও মঙ্গলবার মক্কায় এসে তাওয়াফ সম্পন্ন করেছেন।

ড. কারনি আরও জানান, হাজিদের যাত্রা মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত চলবে। মিনার পর্ব শেষ হলে তিনটি ভিন্ন পরিবহন ব্যবস্থায় আরাফার ময়দানে যাবেন হাজিরা। বৃহস্পতিবার, ৯ জিলহজ সকালে মাশায়ির ট্রেনে প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার হাজি, বহুমুখী পরিবহন এবং ঐতিহ্যবাহী পরিবহন ব্যবস্থায় প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার হাজি আরাফাতে পৌঁছাবেন বলেন তিনি।

মিনা অঞ্চলের ঐতিহাসিক আল-খায়ফ মসজিদে হাজিদের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স, দাওয়াহ ও গাইডেন্স মন্ত্রণালয়। এতে ২৭ হাজার বর্গমিটার এলাকায় জায়নামাজ বিছানো হয়েছে। এটি একটি সমন্বিত পরিচালনা ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার অংশ, যা হাজিদের নিরাপদ ও আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

এ বছর আল-খায়ফ মসজিদে বড় ধরনের উন্নয়ন হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ ও বায়ুচলাচল ব্যবস্থার আধুনিকায়ন। নতুন সংযোজিত হয়েছে উন্নত কুলিং ইউনিট, স্মার্ট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও কার্বন ডাই-অক্সাইড পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্যান ও কুলার চালু করে হাজিদের আরাম বাড়াবে।

প্রচণ্ড গরমের আশঙ্কায় সৌদি কর্তৃপক্ষ হাজিদের নিরাপত্তা ও আরাম নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ড. আব্দুল্লাহ আসির জানান, হজের জন্য এবার ৫০,০০০ স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশাসনিক কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন, যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে অনেক বেশি।

তীব্র গরমজনিত অসুস্থতার চিকিৎসায় ৭০০টির বেশি হাসপাতালের শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে ফ্যান লাগানো আছে। গত বছরের তুলনায় এবারের চিকিৎসা সক্ষমতা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে,” বলেন তিনি।

সূত্র : সৌদি গেজেট

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *