সুনামগঞ্জে কমছে নদ-নদীর পানি, কেটেছে বন্যার শঙ্কা
গত দুই দিন ধরে সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় কমতে শুরু করেছে জেলার সকল নদ-নদীর পানি। ভেসে উঠেছে ডুবে যাওয়া রাস্তাঘাট। সেই সঙ্গে রোদ ঝলমলে দিন হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মনে।
অন্যদিকে মাছের উৎপাদন ও জলজ জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় জেলার বিভিন্ন হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে পানি ঢুকানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এতে হাওরে ক্রমাগত বাড়ছে পানি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর চেরাপুঞ্জিতে বুধবার (৫ জুন) মাত্র ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে । বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৭ দশমিক ৩২ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার নিচে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের সীমান্তবর্তী কয়েকটি উপজেলায় ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বন্যা দেখা দেওয়ার পর টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে সুনামগঞ্জের সকল নদ-নদীর পানি। ডুবে যায় তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক ও মধ্যনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয় নিম্নাঞ্চলের ২ লাখ বাসিন্দাদের, তেমনি বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল।
বিশ্বম্ভরপুর এলাকার বাসিন্দা রাহাত বলেন, পাহাড়ি ঢলের কারণে গত দুদিন পানিতে নিমজ্জিত ছিল শক্তিয়ারখলা ও ১০০ মিটার সড়ক। জরুরি কাজে আমাদের নৌকা ছাড়া গতি ছিল না। এখন পানি নেই আমরা আবার স্বাভাবিক ভাবেই চলাচল করছি।
দোয়ারাবাজার এলাকার বাসিন্দা সোহাগ বলেন, পাহাড়ি ঢলের ধাক্কায় আমাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বিপাকে ছিল শিক্ষার্থীরা। এখন পানি কমতে শুরু করেছে। রাস্তাও ঠিক করা হয়েছে। তবে রাস্তা আরও টেকসই করলে হয়তো পরবর্তীতে ভেঙে যাওয়ায় শঙ্কা থাকতো না।
তবে গত সোমবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলায় বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল না নামায় কমতে শুরু করেছে সুরমা, জাদুকাটা, রক্তি, বৌলাইসহ সকল নদ-নদীর পানি। সেই সঙ্গে সকাল থেকে প্রখর রোদ ওঠায় কেটেছে বন্যার শঙ্কা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাহাড়ি ঢল কম নামছে। এতে করে জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে জেলায় বন্যার কোনো শঙ্কা নেই।