মঙ্গলবার, জুন ৩, ২০২৫
মঙ্গলবার, জুন ৩, ২০২৫

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় উচ্চপর্যায়ের কমিটি হচ্ছে : আইন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার (৩ জুন) সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মচারীরা স্মারকলিপি পেশ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, তাদের দাবি ও আপত্তিগুলো শোনার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। সেখানে উপদেষ্টাসহ অন্যরা থাকবেন। কমিটি শিগগিরই গঠন করা হবে। উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে কমিটির সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে পদ্মা দেশের কিছু ধারা অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। অধ্যাদেশটি যখন উপদেষ্টা পরিষদে পাস হয়েছে তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম।

আইন উপদেষ্টা বলেন, এ আইনের বিষয়ে ওনাদের অনেক আপত্তি আছে। ওনাদের আপত্তিগুলো শোনার পূর্ণ মানসিকতা আমাদের রয়েছে। আমি যতদূর জানি উপদেষ্টা পর্যায়ের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হবে। কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে ওনাদের যে আপত্তিগুলো আছে সেগুলো ভালো করে শোনা, বিবেচনা করা এবং সেই অনুযায়ী সুপারিশ প্রণয়ন করা। সর্বোচ্চ মানবিক দিক থেকে ওনাদের অসুবিধার বিষয়গুলো বিবেচনা করার সর্বোচ্চ মানসিকতা সরকারের রয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু কমিটি গঠন করা হয়েছে তার মানে আমরা পুনর্বিবেচনা করার স্কোপ রেখেছি। কমিটি আজকে বা কালকে গঠন হবে। উপদেষ্টা পর্যায়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উচ্চপর্যায়ের ওই কমিটির সুপারিশ উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আমি যদি কমিটিতে থাকি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে ওনাদের বক্তব্যগুলো শুনব এবং উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তুলে ধরার চেষ্টা করব।

অধ্যাদেশের কিছু ধারায় অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে- জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। অপপ্রয়োগের সুযোগ থাকা কখনোই একটি প্রত্যাশিত ব্যাপার হতে পারে না। ভালো করে শোনা-বোঝার জন্যই কমিটিটা গঠন করা হয়েছে।

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না হলে কোরবানির ঈদের পরে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন কর্মচারী নেতারা। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইন উপদেষ্টা বলেন, এটা উনাদের ব্যাপার।

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা আইন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার পর সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর বলেন, ঈদের ছুটির পর ১৬ জুন আমরা বসব। আমরা আশা করি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে এটার একটা পূর্ণাঙ্গ সমাধান আসবে। এই কালো ও নিবর্তনমূলক আইন প্রত্যাহার হবে।

গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। আর ২৫ মে `সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়। চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে বলে অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের পর থেকেই তা প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।

মঙ্গলবারও সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন কর্মচারীরা। এদিন তারা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে স্মারকলিপি দেন। গত তিনদিনে মোট সাতজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *