সব শিক্ষা বোর্ডে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ : প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন
সদ্য প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে ফল প্রকাশের দাবিতে আজও বিক্ষোভ করতে পারেন শিক্ষার্থীরা। এমন শঙ্কায় আজ থেকে সব বোর্ডে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এসএসসির সব বিষয় ‘ম্যাপিং’ করে ‘বৈষম্যহীনভাবে’ এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের দাবিতে গতকাল ঢাকাসহ দেশের ৮টি শিক্ষাবোর্ডে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে স্থগিত হওয়া এইচএসসির কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছিল। এরপর বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। তবে এই ফলও এখন মানতে চাইছেন না শিক্ষার্থীরা। প্রকাশিত ফল বাতিলের দাবিতে গতকাল রোববার ঢাকাসহ আট শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন তারা। এর মধ্যে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১১ শিক্ষার্থী।
ঢাকা ও ময়মনসিংহে শিক্ষার্থীরা দুপুরের দিকে বোর্ড কার্যালয়ে যান। রাত সাড়ে ৯টার পর্যন্ত দুই বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন থামাতে রাতে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার।
১৫ অক্টোবর এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। স্থগিত হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা আন্দোলনের মুখে বাতিলের কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হয়েছে ভিন্ন পদ্ধতিতে। বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন করা হয়েছে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং)। অর্থাৎ এসএসসিতে যে নম্বর পেয়েছিলেন শিক্ষার্থী, সেটা এইচএসসিতে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
আর এইচএসসিতে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছিল, সেগুলোর উত্তরপত্রের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে। তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইতোমধ্যে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। এ জন্য এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সব বিষয়ের ওপর ‘ম্যাপিং’ করে ফলাফল নতুন করে প্রকাশ করতে হবে।
এই দাবিতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ‘এইচএসসি ব্যাচ-২০২৪’ ব্যানারে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বোর্ডের নিরাপত্তায় ওই এলাকায় পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়। আন্দোলনে কৃতকার্য ও অকৃতকার্য উভয় শিক্ষার্থীরা ছিলেন।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, কারও ফলাফল নিয়ে সন্দেহ হলে পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করতে পারে, এটিই সমাধান। কথায় কথায় বোর্ডে বিক্ষোভ করে হামলা করা এটা কোনো সমাধান না। এজন্য আমি পদত্যাগ করেছি। আজ মন্ত্রণালয়ের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবো।
বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বোর্ড চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ না করে বিষয়টি সমাধান করার জন্য বলা হয়েছে। আজকে সব বোর্ডে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার কথা জানান।