ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা সেটাও বের হয়ে আসবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। তার হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে। আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আশা করি, জাতির পিতার হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারও শেষ হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিরোধী চক্রের যে কোনো অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
বাণীতে ১৫ আগস্টের সব শহীদকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ এবং মহান আল্লাহর দরবারে তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে। এ হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্দ করার অপপ্রয়াস চালায়।
তিনি বলেন, ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা। এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ‘৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল’ জারির মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করে। বিদেশে দূতাবাসে চাকরি দেয়। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের নাগরিকত্ব দেয়। রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার করে। ব্যবসা করার সুযোগ দেয়। বিপুল অর্থের মালিক করে দিয়ে তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করে। পরবর্তী সময়ে অবৈধ সামরিক সরকার এবং বিএনপি-জামাত একই পথ অনুসরণ করে।
জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তার আত্মত্যাগের মহিমা এবং দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মের মাধ্যমে প্রতিফলিত করে সবাই মিলে আসুন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি। জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।