সোমবার, এপ্রিল ৭, ২০২৫
সোমবার, এপ্রিল ৭, ২০২৫

ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরকে স্মার্টসিটি গঠনে প্রযুক্তিগত সহযোগীতা দেয়ার আশ্বাস ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর

ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরকে একটি স্মার্টসিটি গঠনে সর্বাত্মক সহযোগীতা দেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, স্মার্টসিটি গঠনে যে কানেক্টেভিটি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা দরকার তা আমাদের রয়েছে। এরজন্য কারো কাছে আমাদের হাত পাততে হবে না। আমাদের যে কোম্পানীগুলো আছে তারা ইচ্ছে করলেও স্মার্টসিটি গঠন করে দিতে পারবে। সমৃদ্ধ ময়মনসিংহ অঞ্চল বিনির্মাণে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর শিল্পায়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ বরেণ্য আইনজীবী, ঢাকাসস্থ ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন ও উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের আমৃত্যু সভাপতি ও ময়মনসিংহ বিভাগ বাস্তবায়নের পুরোধা সর্বজন শ্রদ্বেয় অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খানের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১২ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকাস্থ ময়মনসিংহ বিভাগ সমিতির ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাত সাড়ে ৭টায় শুরু হয়ে দীর্ঘ তিন ঘন্টা চলে আলোচনা সভাটি।

মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, জাতির জনকের সুযোগ্য কণ্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী, তিনি নিজে স্বপ্ন দেখেন এবং অন্যকেও স্বপ্ন দেখান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে যুক্তিসঙ্গত কোনো প্রস্তাব উপস্থাপন করলে তিনি কোনো বিষয়েই অসম্মতি প্রদান করেন না বরং তিনি তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যতরকম ব্যবস্থা নেয়া দরকার প্রধানমন্ত্রী তা গ্রহন করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহের জামালপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে বেশ কয়েকটি হাইকেট পার্ক এবং ইনকিউবেটর তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, করোনাকালে হাওর এলাকার ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে ২৬ গুণ। গ্রামের মানুষের মাঝেও ইন্টারনেটের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। এখন প্রযুক্তির বিকাশের জায়গা থেকে আমাদের দূরে সরে আসা সম্ভব হবেনা।

মোস্তফা জব্বার বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এখন পৃথিবীর সাথে লড়াই করতে হবে। পৃথিবীর সাথে লড়াই উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য নতুন প্রজন্মকে নতুন প্রযুক্তি বিদ্যায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেককে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে কাজ করে গেলে জনসম্পদকে কাজে লাগিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠতম জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। শুধু ময়মনসিংহ বিভাগ হিসেবেই শ্রেষ্ঠ নয়, আমরা অঞ্চল হিসেবেও শ্রেষ্ঠ হতে চাই। এখন সময় এসেছে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আর্থ-সামাজিক ও সংস্কৃতিকসহ সকল দিক থেকে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে কাজ করার। মরহুম আনিসুর রহামান খান যে লড়াইটা করে গেছেন, সেই লড়াইটা আমাদেরকেও অব্যাহত রাখতে হবে।

দুই কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ব্রিটিশ ভারতের বৃহত্তম জেলা ময়মনসিংহ। এ অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক ধান-পাটেই সমৃদ্ধ ছিল। শিল্পায়ন ও উন্নয়নের দিক থেকে পশ্চাৎপদ এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে আজীবন কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধুর এক সৈনিক অ্যাড. আনিসুর রহমান খান। তিনি বেঁচে থাকলে আরো অনেক কিছু করে যেতে পারতেন বলে জানান মোস্তফা জব্বার।

বৃহত্তর ময়মনসিংহের টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের সাথে যুক্ত না থাকায় মোস্তফা জব্বার দুঃখ করে বলেন, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জের মানুষ যত কথাই বলুক তারা ‘মমিসিংগা’ এই পরিচয় গায়ে থেকে কখনো মুছতে পারবে না। তাই টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জের মানুষ চরিত্রগতভাবে ‘মমিসিংগা’ এই পরিচয়টা বহন করতেই হবে।

বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব ও ঢাকাস্থ ময়মনসিংহ বিভাগ সমিতির সভাপতি ম. হামিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু এম.পি, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান এম.পি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম খালিদ এম.পি, সাবেক মূখ্য সচিব ও গ্লোবাল ডাইভারসিটিস ২০৩০ ইকোনমিক ফোরামের কমিশনার ও ঢাকাস্থ বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ কর্মজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা, ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন। অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান এর সংক্ষিপ্ত জীবনী উপস্থাপন করেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব প্রকৌশলী রাশেদুল হাসান শেলী।

ঢাকাস্থ ময়মনসিংহ বিভাগ সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত অ্যাটর্নী জেনারেল ও ভালুকার কৃতি সন্তান অ্যাডভোকেট আশরাফুল হক জর্জ এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন তোফাজ্জল হোসেন, এম. এ মান্নান, জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খানের সহধর্মিনী রোকেয়া বেগম ফেরদৌস ও পূত্র খান মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, অ্যাডভোকেট বিকাশ চন্দ্র রায়, অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু, ডাঃ হরি শংকর দাশ, ডাঃ এইচ এ গোলন্দাজ তারা, অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক সেলিম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যান প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান মরহুম এডভোকেট আনিসুর রহমান খানের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, তিনি তার কাজের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকবেন।

সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুর রহমান খানের সাথে পারিবারিক স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগ প্রতিষ্ঠায় তার অবদান চিরজাগরূক হয়ে থাকবে।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী তারাকান্দি হয়ে জামালপুর যমুনা সেতু রেল সংযোগ প্রতিষ্ঠায় এই অঞ্চলের মানুষের দাবি প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তার ভূমিকা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এডভোকেট আনিসুর রহমান খান তার কাজের মাধ্যমে চির অম্লান হয়ে থাকবেন।

বক্তারা এডভোকেট আনিসুর রহমান খানের স্মৃতি চারণ করেন এবং তারা এই মহান মানুষটিকে চিরজাগরূক করে রাখতে তার নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *