রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
আন্তর্জাতিকআলোচিত সংবাদব্রেকিং নিউজ

মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে শিশুর দেহে পৌঁছায় অ্যান্টিবডি

করোনা টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা প্রসূতি মায়েরা যখন তাদের সন্তানদের স্তন্যপান করান, সে সময় মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে শিশুদের দেহে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি পৌঁছে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিকিৎসা সাময়িকী ব্রেস্টফিডিং মেডিসিনে সেই গবেষণার প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, করোনা টিকা প্রসূতি মা ও শিশু- উভয়কেই প্রাণঘাতী এই রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।

গবেষক দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার সহযোগী অধ্যাপক জোসেফ লারকিন এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে এই রোগ প্রতিরোধে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা প্রসূতি মায়েরা সন্তানদের যখন স্তন্যপান করান, তখন সন্তানদের দেহেও সেই অ্যান্টিবডি পৌঁছে যায়।’

গবেষক দলের সদস্যরা জানান, সদ্যজাত শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল থাকে। তাদের দেহের অভ্যন্তরীণ গঠনও তখন থাকে অসম্পূর্ণ। এই শিশুদের প্রতিদিনের পুষ্টির যোগান দেওয়ার পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা ও অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পূর্ণ করার কাজটি করে মাতৃদুগ্ধ।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গবেষক দলের অন্যতম সদস্য জোসেফ নেউ এ সম্পর্কে বলেন, ‘শিশুর জন্য মাতৃদুগ্ধ হচ্ছে অনেকটা টুলবক্সের মতো। এটি এমন একটি টুলবক্স, যেখানে শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান থাকে। টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা যেসব নারী সদ্য মা হয়েছেন, তাদের শিশুরা সৌভাগ্যবান। কারণ, অন্যান্য সব উপাদানের সঙ্গে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডিও তারা মায়ের কাছ থেকে পাচ্ছে। একে আমরা পরোক্ষ বা প্যাসিভ ইমিউনাইজেশন বলতে পারি।’

ব্রেস্টফিডিং মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি নার্সিং কেয়ার হাসপাতালে সন্তান জন্ম দিতে ভর্তি হওয়া নারীদের রক্ত ও মাতৃদুগ্ধের নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষক দলের সদস্যরা।

তিন ধাপে এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়, টিকার নেওয়ার আগে, টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এবং টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর।

গবেষক দলের সদস্য এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র লনেন স্ট্যাফোর্ড বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর আগের তুলনায় প্রসূতি মায়েদের রক্ত ও মাতৃদুগ্ধে করোনা প্রতিরোধী বিপুল পরিমাণ অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে। এমনকি, যারা একবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের চেয়েও প্রসূতি মায়েদের দেহে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।’

জোসেফ লারকিন বলেন, ‘আমরা এখন বলতে পারি, টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা নারীরা শুধু নিজেরা করোনা থেকে সুরক্ষিত-তাই নয়, বরং স্তন্যপান করানোর মাধ্যমে তারা সেই সুরক্ষা তাদের শিশুদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। করোনা টিকা ও স্তন্যপান করানো কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা আরেকবার প্রমাণিত হলো।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *