মঙ্গলবার, জুন ২৪, ২০২৫
মঙ্গলবার, জুন ২৪, ২০২৫

ভুল-ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি, বাতিল ‘উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক’ নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতিবছর উপজেলা বা থানা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন করা হয়। পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশনস (পিবিজিএসআই) স্কিমের আওতায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বেছে নেওয়া হয়। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে সম্মাননা স্মারক ও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তবে এবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে।

পিবিজিএসআই স্কিম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেসব শিক্ষকের তথ্য উপজেলা-থানায় পর্যায় থেকে পাঠানো হয়েছে, তাদের অসংখ্য তথ্য ভুল। কারও জন্ম তারিখ ঠিক নেই, কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্যসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্যে গড়মিল। আবার কারও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ভুয়া। ভুল-ভুয়া তথ্য ও তথ্য ঘাটতির কারণে বাধ্য হয়ে এবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

‘অগ্রগতি ও অপারগতা’ শীর্ষক এক চিঠিতে গত ২১ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খানকে এমন তথ্য জানিয়েছেন পিবিজিএসআই স্কিমের পরিচালক মো. তোফাজ্জল হোসেন।

তবে এ স্কিমের আওতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পুরস্কার পাচ্ছেন। আগামী ২৬ জুনের মধ্যে তাদের দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পুরস্কারের অর্থ পাঠানো হবে। তবে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন বাতিল হওয়ায় আনুষ্ঠানিক কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে না।

পিবিজিএসআই’র চিঠির তথ্যমতে, স্কিমের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় ব্যবস্থাপনা জবাবদিহি অনুদান, উপজেলা বা থানা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী পুরস্কারের জন্য ৫২০টি উপজেলা-থানার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছিল। স্কিমের আওতায় পুরস্কার প্রদানের জন্য গত ১ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মাঠপর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে সংগ্রহের জন্য ১৫ জুন স্কিমের কর্মকর্তা সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্টসহ ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী-৫২০টি উপজেলা ও থানার মধ্যে ৩৯২টি উপজেলা ও থানার ১ হাজার ৯৬ জন শিক্ষকের তথ্য পাওয়া যায়। এরমধ্যে ৫৬২ জন শিক্ষকের সব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে শিক্ষক নির্বাচনের জন্য সব উপজেলা থেকে নির্বাচন কমিটির রেজ্যুলেশন ও যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এতে আরও বলা হয়, ‘কিছুসংখ্যক শিক্ষকের মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বর ডুপ্লিকেট (ভুয়া), কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল এবং আইবাস ডাবলপ্লাস সফটওয়্যার থেকে ভেরিফিকেশনের তালিকায় থাকা শিক্ষকের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্ম তারিখ ভুল পাওয়া গেছে। সে জন্য চলতি অর্থবছরে পুরস্কার প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু ২৬ জুনের মধ্যে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পুরস্কারের টাকা পাঠানো হবে ।

জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, ‘চিঠিটি পেয়েছি। এটা খুবই দুঃখজনক। ভুল তথ্য, ভুয়া তথ্যের এমন ছড়াছড়ি কাম্য নয়। শিক্ষকরা যদি এত ছলচাতুরির আশ্রয় নেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে? সমাজে কী বার্তা যাবে? কী কারণে এবং কাদের গাফলতিতে এটা ঘটেছে, তার কারণ বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *