বাজেটের আকার আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল : আমির খসরু
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের সঙ্গে বাজেটের কোনও সম্পর্ক নেই। যা আছে দেশি-বিদেশি ঋণ নির্ভর। এজন্য এবারের ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধূরী।
বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে বাজেট ঘোষণার পর সোমবার (২ জুন) বিকালে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল সেরিনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
প্রতিক্রিয়ায় শুরুতেই আমির খসরু মাহমুদ চৌধূরী বলেন, প্রথমত, বিগত সরকার যেভাবে বাজেটের আকার বাড়াতে-বাড়াতে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয়ত, যখন রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে ব্যয় হয়ে যাবে, তখন কিন্তু পুরো উন্নয়ন বাজেটটা দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ধার করে চালাতে হয়। ফলে যে সমস্যাটা হয়, তখন সরকার দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেয়। এতে একদিকে ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে, দেশের মানুষকে সেটা দিতে হয় বছরের পর বছর। সেটার ইন্টারেস্টের কারণে উন্নয়ন কাজ ভুক্তভোগী হয়। আবার দেশের ভেতর থেকে নিলে আরও বেশি ক্ষতি। এইজন্য যে এটার যে সুদ দিতে হয়, যেটা দেশের পুরো বাজেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, সরকারকে অনেক বেশি টাকা আভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নিলে, ব্যাংকের সুদ বেড়ে যায়। ব্যাংক থেকে সরকার বেশি লোন নিলে ব্যক্তি খাতে লোনটা কমে যায়। তখন বিনিয়োগ হয় না। বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না। মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না, সেটা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং এই বাজেটে সেই বিষয়টা লক্ষ্য করে আমাদের রাজস্ব আয়ের সঙ্গে বাজেটের আকারের একটা সম্পৃক্ততা থাকা উচিত ছিল। আমি মনে করি সেটা হয় নাই।
সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আয় যেটা আছে, সেটা পুরোটাই পরিচালনা ব্যয়ের মধ্যে চলে যাবে। এজন্য উন্নয়নের জন্য পুরোটাই দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে লোন নিতে গেলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আগে যেভাবে বাজেট চলে আসছে, মূলত সেখান থেকে সংখ্যার তারতম্য ছোটখাটো হয়েছে। কিন্তু বাজেটের যে প্রিন্সিপল ওই জায়গাটায় কিন্তু আমরা আগের মতো রয়ে গেছি। আগের সরকারের ধারাবাহিকতার জায়গা থেকে বের হতে পারেনি। এই রাজস্ব আয়কে ভিত্তি করে বাজেট করা উচিত। আমি মনে করি, বাজেটের মৌলিক জায়গাটাতে গলত রয়েই গেছে। আমাদের বাজেট বাস্তবায়নের জন্য বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৩ পয়েন্ট ৫ বিলিয়ন ডলারের মতো। এক্ষেত্রে রাজস্ব আয়কে মাথায় রাখতে হবে। গুণগত দিক থেকে এই বাজেটে আমরা কোনও কিছু পরিবর্তন দেখি না। শুধুমাত্র বাজেটের সংখ্যার সামান্য কিছু কমেছে। কিন্তু বাজেট কাঠামো একই রয়ে গেছে। সুতরাং এটা আগামী দিনের সরকারের জন্য খুব একটা সহজ কিছু হবে না।