নেত্রকোনায় ইঞ্জিন সংকটে ৯ দিন ধরে বন্ধ মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, দুর্ভোগে যাত্রীরা
নেত্রকোনায় ৯ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি। ময়মনসিংহ জংশন থেকে জেলার মোহনগঞ্জে প্রতিদিন দুই দফায় আসা-যাওয়া করে এই লোকাল ট্রেনটি। এ কারণে জেলার রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
ইঞ্জিন সংকটের কারণে ৩০ মে থেকে পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রেনটি। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজারো যাত্রী। ঈদুল আযহা আসন্ন হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ পথে যাতায়াতকারীরা।
শুক্রবার (৭ জুন) পর্যন্ত ৯ দিন পেরিয়ে গেলেও ট্রেনটি চালুর বিষয়ে কোনো তথ্য নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীকে এপথে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ৯ দিন ধরে ট্রেন বন্ধ থাকায় বাস-অটোরিকশাসহ বিকল্প পথে কর্মস্থলে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
রেলপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ জংশন স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস প্রতিদিন ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে প্রথম দফায় ছেড়ে যায়। পথে শ্যামগঞ্জ, হিরণপুর, চল্লিশা, নেত্রকোনার সাতপাই বড় রেলওয়ে স্টেশন, নেত্রকোনা কোর্ট রেলওয়ে স্টেশন, ঠাকুরাকোনা, বারহাট্টা ও অতিথপুর পার হয়ে মোহনগঞ্জে পৌঁছায় সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে। ঘণ্টা খানেক বিরতি দিয়ে ফের ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হয় ট্রেনটি।
মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি দিনের দ্বিতীয় যাত্রা ময়মনসিংহ থেকে শুরু করে দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে। একইপথে মোহনগঞ্জ পৌঁছাতে বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা বেজে যায়। ৩০ মে বন্ধ হওয়ার পর শুক্রবার পর্যন্ত চালু হয়নি ট্রেনটি।
স্থানীয়রা জানান, সারাদেশে যেখানে রেললাইন সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং যাত্রীসেবা উন্নত হচ্ছে, সেখানে এই রেলপথে ট্রেনটি নয়দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। ট্রেনে কম খরচে নিরাপদ ভ্রমণ করা গেলেও কোনো নোটিশ ছাড়াই ট্রেনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ওই রেলপথে নিয়মিত যাতায়াতকারী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ট্রেনটি বন্ধ থাকায় চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সব যাত্রীর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিদিনই যাতায়াতে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রেনটি চালুর জন্য রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি।
ট্রেন বন্ধ থাকায় জনদুর্ভোগের কথা জানিয়ে নেত্রকোনার সাতপাই এলাকার বাসিন্দা মিসবাউজ্জামান আশাদ বলেন, ৯ দিন ধরে মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথে চলাচলরত লোকাল ট্রেনটি বন্ধ। এতে সাধারণ যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা স্টেশনের মাস্টার আতাউর রহমান বলেন, ট্রেনের ইঞ্জিনটি নষ্ট হওয়ার পর তা গত ১ জুন চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। এটি ঠিক হয়ে এলে ট্রেনটি চালু হবে।
নেত্রকোনা সাতপাই রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইঞ্জিন সংকটের কারণে ট্রেনটি বন্ধ রয়েছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস চালু হবে।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে বিভাগীয় অঞ্চলের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. শাহীনুর ইসলাম জানান, ইঞ্জিন সংকটের কারণে ট্রেনটি সাময়িক বন্ধ রয়েছে। ইঞ্জিন ঠিক হলে পুনরায় চালু হয়ে যাবে।