শুক্রবার, এপ্রিল ১১, ২০২৫
শুক্রবার, এপ্রিল ১১, ২০২৫

নির্ধারিত মহাসড়ক ব্যবহারে টোলের বিধান রেখে সংসদে বিল

মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং টোল আদায়ে সড়ক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নতুন আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, এ আইন অমান্য করলে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সংক্রান্ত ‘মহাসড়ক বিল-২০২১’ সংসদে উত্থাপন করেন। পরে বিলটি চার সপ্তাহের মধ্যে যাচাই করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠনো হয়।

১৯২৫ সালের হাইওয়ে অ্যাক্ট রহিত করে মহাসড়ক নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং অবাধ, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ যান চলাচলের জন্য নতুন আইন করা হচ্ছে।

বিলে বলা হয়েছে, আইনের অধীনে গেজেট করে সরকার কোনো সড়ক বা মহাসড়কে কারা প্রবেশ করতে পারবে বা কারা পারবে না, তা নির্ধারণ করবে। কোনটা মহাসড়কের সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে ঘোষণা করা হবে, পরিচালনা কেমন করা হবে, কোনগুলো টোল নেওয়া হবে এসব ঠিক করবে।

সরকার বা সরকারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি মহাসড়ক উন্নয়ন, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণ, মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট সুয়ারেজ সিস্টেম, ড্রেন, কালভার্ট, সেতু নির্মাণ ও সংস্কার করবে।

এতে আরও বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব হতে মহাসড়কের সম্ভাব্য ক্ষতি হ্রাসের জন্য মহাসড়ক নেটওয়ার্কের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সহনশীল টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত মাশুল প্রদান সাপেক্ষে নাগরিক সেবাপ্রদানকারী সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ইউটিলিটি সংযোগগুলো মহাসড়কের প্রান্তসীমা বরাবর স্থাপন করা যাবে।

তবে শর্ত থাকে যে, মহাসড়কের উন্নয়ন, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের সময় প্রয়োজন হলে ওই ইউটিলিটি সংযোগগুলো সেবাপ্রদানকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ খরচে নির্দিষ্ট সময়ে অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে স্থানান্তর করবে।

প্রতিবন্ধী, শিশু ও বায়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের মহাসড়কে নির্দিষ্ট স্থান ও নিরাপদে ব্যবহারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার বিধান খসড়া আইনে রাখা হয়েছে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত জায়গা ছাড়াও মহাসড়কে গবাদি পশু চরানো, প্রবেশ করানো, পারাপার করানো যাবে না। মহাসড়ক নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের সময় এ কাজের জন্য নিয়োজিত ব্যক্তি ও মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করতে হবে, তা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিলে মহাসড়ক বা সড়কের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি, অবৈধ দখল বা প্রবেশমুক্ত রাখার জন্য কী করণীয় হবে এবং সার্ভে করার জন্য কতদূর পর্যন্ত মানুষের বাড়ি পর্যন্ত ঢুকতে পারবে, সেসব বিষয়েও বলা হয়েছে।

খসড়া এ আইনে আরও বলা হয়, মহাসড়কে ফসল, খড় বা অন্য কোনো পণ্য শুকানো বা অনুরূপ কোনো কাজে মহাসড়ক ব্যবহার করা যাবে না। মহাসড়কের নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থান দিয়ে পদযাত্রা করা যাবে না বা এ আইনের অধীন অনুমোদিত উদ্দেশ্য মহাসড়কের কোনো স্থানে অবস্থান করা যাবে না।

বিলে বলা হয়েছে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া মহাসড়কে কোনো বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, তোরণ বা অনুরূপ কিছু টাঙানো বা স্থাপন করা যাবে না। ধীর গতিসম্পন্ন যানগুলো মহাসড়কের নির্ধারিত লেন ছাড়া অন্য কোনো লেন ব্যবহার করতে পারবে না।

খসড়া আইনে মহাসড়কের ক্ষতি হ্রাস, স্থায়িত্ব, সার্বিক নিরাপত্তা ও যানবাহন চলাচলের স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে ওভারলোড নিয়ন্ত্রণসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আেইনে রয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *