নার্সিং ও মিডওয়াইফারি স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে : ময়মনসিংহে স্বাস্থ্য সচিব
স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা ও মানবিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। সারাদেশে সেবা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়েছে স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্বপূর্ণ এই অধিদপ্তরটি।
আর এটা সম্ভব হয়েছে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মরতদের ঐকান্তিক চেষ্টা ও আন্তরিকতায়। ফলে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত নার্সিং জনবল তৈরি ও পদায়নের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে এবং সুস্থ জাতি গঠনে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা ও সেবার মান বজায় রেখে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অডিটরেমে নার্স ও মিডওয়াইফিদের জন্য বয়স্ক স্বাস্থ্য সেবা, কিডনি রোগী ও ডায়ালাইসিস, প্রসব ও প্রসব পরবর্তী পরিচর্যা এবং তথ্য অধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রণয়নে নার্সিং বিষয়ক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান ও এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং নার্সিং বিষয়ক বিভিন্ন নীতিমালা, কৌশলপত্র ও নিয়োগবিধিসহ অন্যান্য বিধিমালা প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি পেশার উন্নয়নের মাধ্যমে সবার জন্য গুনগত মানসম্পন্ন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা ও সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের নার্সিংখাতকে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আকমল হোসেন বলেন, এক সময় দেশে অবহেলিত খাতগুলোর মধ্যে একটি ছিল নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। সরকারের বিশেষ নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় নতুন করে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা চলছে এই খাতকে। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার নার্স-প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক নার্স প্রতিবছর বের হওয়ায় এখন দেশের নার্সিং খাতের চাহিদা পূরণ করে কর্মসংস্থানের জন্য তাদের বিদেশে পাঠানোরও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এ লক্ষে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর সম্প্রতি, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। এর ফলে কর্মতৎপরতা বেড়ে যায় স্বাস্থ্যখাতে।
দেশের নার্সদের উৎসাহ দিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর নানা উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। আকমল হোসেন আরও বলেন, অধিদপ্তরের কার্যক্রমে আরও গতি আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয় প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের। নার্সিং শিক্ষার মান বজায় রাখতে সকল সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি প্রতিষ্ঠানে একই মানের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ সৃজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহে নির্মাণ করা হয়েছে একটি আধুনিক নার্সিং কলেজ। দেশের যেসব জেলাগুলোতে এখনো সরকারি নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, সেসব জেলায় নার্সিং কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। এরই ধারাবাহিকতায় সার্বজননীন স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দের সভাপতিত্বে ও নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সিনিয়র স্টাফ নার্স অলক দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. এনামুল হাবীব, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ নাজমুল আলম খান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেঃ জেনারেল মোঃ গোলাম ফেরদৌস।
এ সময় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশন (সার্বিক) তাহমিনা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা মেজিস্টেট লুৎফন নাহার, ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ- পরিচালক ডাঃ মোঃ জাকিউল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান, ডাঃ শেখ আলী রেজা সিদ্দিকী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক, উপ সেবা তত্ত্বাবধায়ক হামিদা বেগমসহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী, নার্স ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ। এর পর প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন।