বুধবার, এপ্রিল ২, ২০২৫
বুধবার, এপ্রিল ২, ২০২৫

টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : তলিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, ভাঙছে সড়ক

টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বন্যার্তরা। দেখা দিচ্ছে সুপেয় পানির অভাব।

অন্যদিকে জেলার ভূঞাপুরে যমুনা নদীর পানি গ্রামে প্রবেশ করায় একটি পাকা সড়ক ভেঙে গেছে। এ ছাড়া পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শতশত পরিবার। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষজন।

সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, ঘোষপাড়া, খানুরবাড়ী, ভালকুটিয়া এলাকায় দেখা গেছে যমুনা নদীর পানি পাড় উপচে এসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষজন। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। গত দুই দিন ধরে তারা পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ছাড়া যমুনা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় গোবিন্দাসী-কষ্টাপাড়া-ভালকুটিয়া রাস্তাটি ভেঙে গেছে। এতে ওই রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। গোবিন্দাসী বাজারের কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে পানিবন্দি উপজেলার গাবসারা, নিকরাইল, অর্জুনা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন।

শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত যমুনা নদীর ভূঞাপুর অংশে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। আর বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় যমুনা নদীতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া সকাল ৯টার তথ্যে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, ফটিকজানি নদীর পানি নলচাপা ব্রিজ পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার এবং মধুপুর পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ভুঞাপুর, কালিহাতী, নাগরপুর, গোপাপলপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নদীর পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙনও অব্যাহত রয়েছে।

ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়ার ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের ঢাকা পোস্টকে জানান, পানির স্রোতের কারণে ভালকুটিয়া এলাকার পাকা রাস্তা ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিবছরই যমুনা নদীর পানি এলাকায় প্রবেশ করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষজন। নদীতে স্থানীয় একটি বাঁধ নির্মাণ করা হলে এলাকায় বন্যা হবে না।

উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন, যমুনার পানি লোকালয়ে আসায় কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, খানুরবাড়ি, চিতুলিয়াপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ভালকুটিয়ার রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় আরও বেশি দুর্ভোগে বেড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুনুর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভাঙন এলাকা ও বন্যাকবলিতদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *