সোমবার, মার্চ ২৪, ২০২৫
সোমবার, মার্চ ২৪, ২০২৫

টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে সেমিতে উরুগুয়ে

পুরো ৯০ মিনিট জুড়ে দর্শকদের জন্য উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিতে পারল না কোনো দলই। একের পর এক ফাউলে বারবার থমকে গেল খেলা। ডিফেন্ডার নান্দেজ লাল কার্ড পাওয়ায় শেষের ১৫ মিনিট একজন কম নিয়ে খেলে উরুগুয়ে, তবু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি দরিভাল জুনিয়রের দল। পেরে উঠেনি টাইব্রেকারের স্নায়ু চাপে।

লাস ভেগাসে মূল ম্যাচ গোল শূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে উরুগুয়ে।
কোয়ার্টার ফাইনালাই যেন এখন ব্রাজিলের শেষ অবস্থান। শেষ আটের লড়াই যেন বিভীষিকাময় হয়ে উঠছে সেলেসাওদের জন্য। ২০১৮ সালের পর ২০২২ সালের বিশ্বকাপ, দুবারই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয় তারা (মাঝে ২০২৯ সালের কোপা জিতে দলটি)। ২০২১ সালের ফাইনালে খেললেও হেরে যায় আর্জেন্টিনার কাছে। এবার কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালও তাদের সামনে সেমিফাইনালের মাঝে ভাঙা সেতু হয়ে দাঁড়াল। ৯ বারের কোপা চ্যাম্পিয়নরা আর সেই সেতু পার হতে পারল না। উরুগুয়ের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিল টুর্নামেন্ট থেকে।ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে উরুগুয়ে।

হাইভোল্টেজ এই ম্যাচে প্রথমার্ধ তো বটেই পুরো ম্যাচেই কোনো গোল করতে পারেনি ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। এতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে খেয়ে হারায় ব্রাজিল। টাইব্রেকারের প্রথম ৩ শ্যুটের ২টিই মিস করে ব্রাজিলিয়ানরা। অন্যদিকে প্রথম ৩ শ্যুটআউটেই সাফল্য দেখায় উরুগুয়ে। চতুর্থ শ্যুট উরুগুয়ে মিস করলেও পঞ্চম শ্যুট উরুগুয়ের জয় নিশ্চিত করে ম্যানুয়েল উগার্তে।

রোববার (৭ জুলাই) লাস ভেগাসে টুর্নামেন্টের চতুর্থ ও শেষ কোয়ার্টারে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল উরুগুয়ে। ম্যাচটিতে ছন্দমায় খেলের চেয়েও মারামারিই যেন বেশি ছিল। ছিল ফাউলের ছড়াছড়ি, তার সঙ্গে সমানতালে চলছিল মারামারির মহড়া। কিছু আক্রমণ হলেও গোল করতে পারেনি কেউ। এই অর্ধের শুরুর দিকে ব্রাজিল তেমন আক্রমণে যেতে পারেনি। অন্যদিকে সেলেসাওদের উপর চাপ তৈরি করতে থাকে উরুগুয়ে।

ম্যাচের ১৮ মিনিটে ডারইউন নুনেজের একটি হেড রুখে দেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডাররা। এক মিনিট পর আবারও আক্রমণে আসে উরুগুয়ে। এবার কর্নার থেকে আসা বল ব্রাজিলের ডি-বক্সের মধ্যে পড়লে সেখানে শট নেন নিকোলাস ডে লা ক্রুস। তার ক্রস থেকে মাথিয়াস ওলিভেরা হেড করলেও সেটি গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

এরপর ৩৫ মিনিটে গোলের দারুণ একটি সুযোগ তৈরি করেছিল উরুগুয়ে। নাহিতান নন্দেজের ক্রস থেকে নুনেজের হেড গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। সেখান থেকে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় ব্রাজিল। রাফিনহা একাই উরুগুয়ের ডি-বক্সে বল নিয়ে ঢোকেন। তবে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে লক্ষ্যভেদ করতে না পারলেও কর্নার আদায় করে নিয়েছেন। অবশ্য কর্নার থেকেও সফল হতে পারেননি বার্সেলোনোর এই ফরোয়ার্ড।
৪৩ মিনিটে উরুগুয়ের পক্ষে আবার আক্রমণে আসেন লা ক্রুস। ম্যানুয়ের উগার্তের অ্যাসিস্ট থেকে পাওয়া বল গোলবারের বাঁপাশ দিয়ে মেরে দেন তিনি। ইনজুরি সময়ে আরও একবার আক্রমণে আসে ব্রাজিল। আন্দ্রিয়েস গুইমারেসের অ্যাসিস্ট থেকে বাঁপায়ের শট নেন রাফিনহা। তবে গোলরক্ষক সার্জিও রচেটের দেয়াল ভাঙতে পারেননি তিনি। গোলশূন্য সমতায় বিরতিতে যায় দুই দল।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে। ৫৩ তম মিনিটেই দুইবার গোলচেষ্টা চালায় তারা। যেখানে প্রথম আক্রমণ রুখে দেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডাররা। পরেরটি চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে। ৬৮ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাস পাকেতার একটি আক্রমণ ব্লক করে দেয় উরুগুয়ের রক্ষণভাগ।

এরপর ৭২ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে বাজে ফাউল করে লালকার্ড দেখেন উরুগুয়ে ডিফেন্ডার। উরুগুয়ের অর্ধে বল নিয়ে আক্রণে যাচ্ছিলেন রদ্রিগো। এমন সময় পেছন থেকে এসে রদ্রিগোকে থামানোর জন্য পায়ের আক্রমণ করেন নন্দেজ। এতে প্রথমে তাকে হলুদকার্ড, পরে ভিএআর দেখে লালকার্ড দেখানের সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে।

উরুগুয়ে ১০ জনের দলে পরিণত হলেও সুবিধা আদায় করে নিতে পারেনি ব্রাজিল। অথচ তখন ম্যাচের বাকি ১৫ মিনিট। কিন্তু এই সময় কাজে লাগাতে পারেনি সেলেসাওরা। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ালে হারই হজম করতে হয় দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যদের।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *