টরন্টোয় সৌরভ ছড়াচ্ছেন ঢাকার মেহজাবীন
রোম যখন পুড়ছিলো, সম্রাট নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল! রোমান সাম্রাজ্য নিয়ে এটা বহুল প্রচলিত প্রবাদ। একইভাবে ঢাকার অভিনয়শিল্পীরা যখন আলো-অন্ধকারের গল্পে ভীত অথবা ক্ষুব্ধ সময় পার করছে, তখন দেশের অন্যতম অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ফুলের সৌরভ ছড়াচ্ছেন টরন্টোয়!
সম্রাট নিরোর প্রবাদটি নেতিবাচক অর্থে প্রচলিত হলেও অভিনেত্রী মেহজাবীনের ঘটনাটি দেখা হচ্ছে পজিটিভ অর্থে। কারণ, বিশ্বখ্যাত টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (টিআইএফএফ)-এর এবারের আসরে একমাত্র বাংলাদেশী সিনেমার প্রতিনিধিত্ব করছেন মেহজাবীন। উৎসবের ডিসকভারি প্রোগ্রামে স্থান পেয়েছে তার অভিনয়ে প্রথম সিনেমা ‘সাবা’। এটি নির্মাণ করেছেন মাকসুদ হোসেন।
৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব প্রিমিয়ার হয়েছে ‘সাবা’র। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর আরও একটি শো হয়েছে। যাতে সরাসরি অংশ নিয়ে ছবিটি প্রসঙ্গে কথা বলেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। এসময় পাশে ছিলেন ছবির অন্যতম অভিনেতা মোস্তফা মনওয়ার এবং নির্মাতা মাকসুদ হোসেন। ১৪ সেপ্টেম্বর আরও একটি শো আছে ‘সাবা’র।
৮ সেপ্টেম্বরের শো শেষে একগুচ্ছ সাদা লিলি ফুল হাতে যেন শান্তি ও সৌরভের বার্তা ছড়িয়ে দিলেন টরন্টো শহরে। পরনে কালো পোশাক আর মিষ্টি রোদে দারুণ এক দ্যুতি ছড়িয়ে দিলেন মেহজাবীন। যে আলো আর সৌরভের অনেকটাই আছড়ে পড়েছে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে অভিনেত্রীর ভেরিফায়েড পেইজের সুবাদে।
ছবির নিচে মন্তব্যের ঘরে প্রশংসায় ভাসছেন মেহজাবীন। বিপরীতে খবর মিলছে, প্রতিটি শোয়ের পর মুহুর্মুহু করতালিতে সিক্ত হচ্ছে ‘সাবা’ টিম।
এর আগে, টরন্টোয় উৎসবস্থলে গিয়ে মেহজাবীনের দেখা হয়ে গেলো তারই অসম্ভব পছন্দের অভিনেত্রী নওমি ওয়াটসের সঙ্গে। ব্রিটিশ এই অভিনেত্রীর পুরনো ভক্ত মেহজাবীন। ফলে দেখা হওয়ার পর ভক্তসুলভ ছবি তুলতে ভুললেন না। সেটি সোশ্যাল হ্যান্ডেলে প্রকাশ করতে করেননি দ্বিধা।
ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘নওমি ওয়াটসের সঙ্গে টিআইএফএফ-এ ফ্যানগার্ল মোমেন্ট।’ যেখানে তিনি নিজে ‘ভক্ত বালিকা’ বলে সম্বোধন করেছেন।
এদিকে শুধু অভিনয় নয়, ‘সাবা’ সিনেমাটি প্রযোজনাও করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। প্রযোজকের তালিকায় তার পাশাপাশি আছেন আরিফুর রহমান, তামিম আব্দুল মজিদ, ত্রিলোরা খান, মাকসুদ হোসেন ও বরকত হোসেন পলাশ। চিত্রগ্রহণ করেছেন বরকত হোসেন পলাশ। আবহ সংগীতে আম্মান আব্বাসি।
‘সাবা’ অর্থ সকাল, সকালের মৃদু বাতাস। মেহজাবীনের আশা, “গল্প, চরিত্র, নির্মাণ, সহশিল্পী ও নেপথ্যের মেধাবী কলাকুশলীদের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগসহ সব মিলিয়ে ‘সাবা’ আমার জীবনে সবসময়ই বিশেষ একটি নাম হয়ে থাকবে।”
‘সাবা’ সিনেমায় নাম ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে মেহজাবীনকে। এতে আরও অভিনয় করেছেন রোকেয়া প্রাচী ও মোস্তফা মনওয়ার। সিনেমাটির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ত্রিলোরা খান ও মাকসুদ হোসেন।
বলা দরকার, টরন্টো উৎসবের ডিসকভারি প্রোগ্রামে বিভিন্ন দেশের নবাগত ও উদীয়মান পরিচালকদের প্রথম ও দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র জায়গা পেয়ে থাকে। এবারের আসরে নির্বাচিত হয়েছে ‘সাবা’সহ ২৪টি চলচ্চিত্র। এরমধ্যে ২০টির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে। এবারের উৎসব চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।