সোমবার, জুন ২৩, ২০২৫
সোমবার, জুন ২৩, ২০২৫

জুলাইয়ের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে জাতি ঐক্যবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আজকে জুলাইয়ের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জুলাইয়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত এবং বিচার কাজের জন্য। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে কোনও ধরনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই এবং তার নিজস্ব গতিতে চলছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে— এই বিচার প্রক্রিয়া কোনও বিলম্ব ছাড়াই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আমি এই দায়িত্বে অটল থাকবো।’

রবিবার (২২ জুন) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা এবং দক্ষতা-বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আজকে আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ আমরা সামনে জুলাই অভ্যুথানের এক বছর উদযাপন করবো। আমাদের তরুণরা রক্তের বিনিময়ে তাদের প্রত্যাশা জানিয়েছে এবং আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে— তাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। এসব কিছুই সম্ভব যদি শুরুটা সঠিকভাবে করা হয়। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের সেই সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ আর কখনও আসবে না। এই সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত হবে না। ’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ একটা জটিল পরিস্থিতির মধ্যে আছে। হাজারো মানুষের ত্যাগের মধ্যে দিয়ে হওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রমাণ। এই জাগরণ এসেছিল হাজারো মানুষের প্রাণের বিনিময়ে, যেখানে আরও কয়েক হাজার হতাহত হয়েছে। এখন আমরা যারা বেঁচে আছি, তাদের ওপর কিছু দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। এই দায়ভার শেষ তখনই হবে, যখন জুলাইয়ের মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের মনে রাখতে হবে— জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদলের জন্য হয়নি। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত যে গভীর আধিপত্য ও পক্ষপাতিত্ব রয়ে গেছে, তা ভেঙে ফেলার তীব্র আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে এটি ইন্ধন পেয়েছিল। বিপ্লবের প্রতি আমাদের লক্ষ্য— আমাদের সব কর্মের দ্বারা পরিচালিত একটি ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্য ও মর্যাদা সৃষ্টি করা। এই অভ্যুত্থান পুরনো শৃঙ্খলা ভেঙে এমন একটি রাষ্ট্রকে উন্মোচিত করতে চেয়েছিল, যাতে কোনও একক দল কখনও মরিয়া বা কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে না পারে। এই আশা এবং অনুপ্রেরণা এখন আমাদের পুনরুত্থানের কঠিন কাজে সন্তুষ্টি জাগায়।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চলমান সংস্কারের একজন স্টেকহোল্ডার হিসেবে আমাদের যা করার কথা, আমরা তাই করছি। যখন আমরা সংস্কারের কথা বলি, তখন কিন্তু অল্প কোনও কিছুর কথা বলি না, যেটি সময় এবং ক্ষমতার চাপে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমরা সেসব কাজের কথাই বলছি— যেগুলো বিগত ৫৪ বছরে করা হয়নি। আমরা সেই পরিবর্তনের কথা বলি, যা শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। আমাদের ওপর যে সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেসব কাজের ফলে স্বৈরাচারতন্ত্র ভেঙে যাবে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *