বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫

জামালপুরে নদী ভাঙনের আতঙ্কে হাজারও মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের কারণে ভাঙন কবলে পরেছে নদী পাড়ের মানুষ।

গত কয়েক দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ নদীর পানি। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গনের আতঙ্ক।

এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গিয়েছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানি ইউনিয়নের মন্ডল বাজার সংলগ্ন প্রায় ২শ মিটার পাকা সড়ক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দশ থেকে পনের হাজার মানুষ যাতায়াত করতো। এই সড়কটি নদীতে বিলীন হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

গত সাতদিন থেকে নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে । একমাত্র সড়ক ভেঙে যাওয়ায় চিকাজানি ও হরিচন্ডি ইউনিয়নের দশটি গ্রামে দেওয়ানগঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের শেষ সম্বল বাড়ি ঘর দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। বিপাকে পড়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ। ভাঙনে ভুক্তভোগী জাকিউল ইসলাম জানান, গত বছরের বন্যায় তার ঘর বাড়ি ভেঙে যায়, তাই তিনি শেষ আশ্রয় হিসেবে পাকা সড়কের পাশে একটি ঘর তৈরি করে কোন রকম পরিবার নিয়ে আছে। এখন সেখানে আবারো নতুন করে ভাঙ্গনের স্বীকার হচ্ছে। এখন পরিবার নিয়ে কোথায় যাবে সেই চিন্তা তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।

অটোরিকশা চালক সুজন জানান, ভাঙ্গনের কবলে পরে বিলিয় হওয়া একমাত্র পাকা সড়ক আমার আয়ের মাধ্যমে চাকা আটকে গেছে। তাই আয় রোজগার না থাকায় আমার পরিবার নিয়ে মানবতর জীবন যাপন করছি।

বানভাসি শেফালী বেগম বলেন, প্রতিবছর বন্যায় আমাদের ঘর-বাড়ি ভিটে মাটি নদীতে চলে যায় কিন্তু আমাদের দেখার কেউ নেই । আপনারা (সাংবাদিক ) আসেন কাগজে লিখেন তাওতো কোন কাজ হয়না। শুধু ভোটের সময় নেতারা আসে ও নানা রকম প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু ভোট শেষ হলে আর তাদের দেখা পাওয়া যায় না। আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না।

এদিকে বন্যা এবং ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে চিকাজানি ও হড়িচন্ডি ইউনিয়নের চর বাহাদুরাবাদ, ফারাজি পাড়া, বড়ই কান্দি, গোলাবাড়ি, মইন্যা বাজার, হাজারিগ্রাম ও নয়া গ্রাম এবং উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে চর ডাকাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়।

স্থানীয়রা মনে করেন এই বিদ্যালয় দুটি ভাঙন থেকে রক্ষা করতে না পারলে চর এলাকার শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়বে। নদী পাড়ের মানুষেরা মনে করে ত্রাণ সহায়তা না দিয়ে নদীর বাঁধ নির্মাণ করে দেওয়া হোক।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ জানান, এই উপজেলা একটি নদী বেষ্টিত এলাকা এখানে প্রতিবছর বন্যা ও নদী ভাঙন লেগেই থাকে। ইতিমধ্যে রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কথা আমি জেনেছি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

নদী শাসন যেহেতু পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তাই এই ভাঙনের ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগত ও লিখিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলি। এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদেরকে বলা হয়েছে। আমাদের প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী ও মজুদ রয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় জরুরি ত্রাণ বিতরণ চালু করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *