গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনার কাজ করা হচ্ছে : তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনার কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ বার্তা’র মোড়ক উন্মোচন ও মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি (গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনা) নিয়ে আমি এরই মধ্যে কাজ করছি। বিষয়টি একটু জটিল। জটিল এ কারণে যে, সংখ্যা নির্ণয় করার যে ফলাটা আছে তার মধ্যেও কিছু গলদ আছে, সেটিকেও ম্যানুপুলেট করা যায়। যদি বলি ফর্মুলা অলরেডি আছে সেটি দিয়ে সঠিক তালিকা করে ফেলবো, এর মধ্যেও দেখা যাবে সঠিক হয়তো অনেক কিছু হবে না। কারণ, পেছন দিকে ম্যানুপুলেশন সমস্যা। যে কারণে আমি ফর্মুলাটা নিয়ে কাজ করছি।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ক্রোড়পত্র দিই, তা কিন্তু ডিএফপির লিস্ট দেখে দিচ্ছি না। আমি কিন্তু একটি লিস্ট বানিয়েছি, বিশেষ সোর্সের মাধ্যমে। যেটি আমাকে মোটামুটি সঠিক একটি সার্কুলেশনের চিত্র দিয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি এখন সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছি।
‘কারা কত ক্রোড়পত্র পেয়েছেন তা এক্সেল সিটের মাধ্যমে মেইন্টেইন করি। কাছাকাছি সার্কুলেশনের দুটি পত্রিকার মধ্যে একটি পত্রিকা কম পেলে পরে তা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করি। আমি ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করি। ৬০-৭০ শতাংশ সিদ্ধান্ত সার্কুলেশনের ওপর ভিত্তি করে নিই। কারণ, এখানে সরকারের স্বার্থ আছে, বেশিরভাগ মানুষের হাতে এটি আমি পৌঁছাতে চাই।’
মোহাম্মদ আলী আরাফাত আরও বলেন, কিছু পত্রিকার সার্কুলেশন চ্যালেঞ্জ আছে, কিন্তু হয়তো সেই পত্রিকার ইতিহাস ঐতিহ্য আছে। আবার কিছু পত্রিকার সার্কুলেশন চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেখানে হয়তো নামকরা সম্পাদক আছেন, যার নিজেরই ইতিহাস-ঐতিহ্য ব্র্যান্ডিং আছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে ব্যালেন্স করে ক্রোড়পত্র দিয়েছি।,কোনো ব্যক্তির সুপারিশে ক্রোড়পত্র দিইনি। সুপারিশ করেছে- নিয়েছি, দেখেছি; কিন্তু দিন শেষে আমার ফর্মুলাই অ্যাপ্লাই করেছি।
ডিএফপিতে নতুন ডিজি নিয়োগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা সার্কুলেশনের কাজ করেন তাদের নিয়ে আমি বসবো। ফর্মুলা ফাইনটিউন করবো আমরা। সত্যিকার অর্থে সার্কুলেট, অর্থাৎ শুধু প্রিন্ট করলে হবে না, বিক্রিত নম্বরটাও পাওয়ার ফর্মুলা বের করবো আমরা, যেখানে ম্যানুপুলেশনের সুযোগ থাকবে না। আমার কাছে আসল লিস্টটা যেন থাকে। সব জায়গায় আমি এক ধরনের স্বচ্ছতা ও অবজেকটিভিটি আনার চেষ্টা করছি। আপনারা সবার সামনে যে বিয়য়টি বলবেন, আমাকে একা পেলেও সে কথাটিই বলবেন।
সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি নিয়ে এ মুহূর্তে আমি বলতে পারবো না, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এ মুহূর্তে আমি গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে কাজ করছি।
‘গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে এটি মোটামুটি সবকিছু কাভার করে ফেলবে। কারণ, এখানে অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মোটামুটি সবকিছুই কাভার করবে। গণমাধ্যমের সমস্যাগুলোর সমাধানও হবে’- এ প্রসঙ্গে বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শ্রম আইনের অধীনে যত সুরক্ষা দেওয়া আছে সেগুলোকে রেখে বাকি বিষয়গুলো গণমাধ্যমকর্মী আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বিটিভিসহ তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ১৫টি ডিপার্টমেন্টের দিকেই তাকাবো। সবগুলোর ভেরতে ঢুকবো, শুধু ভেতরেই ঢুকবো না, একেবারে তলদেশ পর্যন্ত যাবো। ভেতর থেকে আমার সাধ্যের মধ্যে, সামর্থ্যের মধ্যে যতটুকু পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও সংস্কারের সুযোগ আছে সবটুকু করবো। তবে এটিও প্রায়োরিটি বেসিসে করবো। সব জায়গায় কিছু না কিছু পরিবর্তন আপনারা দেখতে পাবেন।