বৃহস্পতিবার, জুন ৫, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, জুন ৫, ২০২৫

ঈদে নতুন জামা নয়, এক খণ্ড রুটি চায় গাজার শিশুরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। সেখানকার মানুষের মধ্যে নেই ঈদের আনন্দ।
বছর ঘুরে আবারও চলে এসেছে খুশির ঈদ। কাল শুক্রবার (৫ জুন) মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে উৎযাপিত হবে ঈদুল আজহা। শিশুসহ সবার নতুন জামা পরা, পরিবারের সবার একত্রিত হওয়া, পশু কেরাবানিসহ আরও অন্যান্য আনন্দে উল্লাসে কাটবে দিনটি।

তবে দখলদার ইসরায়েলের হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের গাজায় নেই ঈদের আমেজ। যেখানে অন্যান্যরা আনন্দের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেখানে গাজার মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন অভুক্ত থাকা, বাস্তুচ্যুত হওয়া আর নতুন করে হত্যার শিকার হওয়া মানুষের জন্য শোক করার জন্য। অথচ অন্যান্য সময় গাজার মানুষ ভেড়ার মাংসের ভোজ এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে দিনটি কাটাতেন। এখন তারা খুঁজছেন খাবার আর নিরাপদ আশ্রয়।

সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরবকে হুসাম আবু আমের নামে এক বাবা বলেছেন, “ঈদে আমার সন্তানদের আমি নতুন জামা আর খেলনা কিনে দিতাম। এটি ছিল বছরের শ্রেষ্ঠ আনন্দের সময়। কিন্তু এখন ঈদে শিশুদের একমাত্র ইচ্ছা হলো এক খণ্ড রুটি। কোনো মিস্টি নয়, কোনো খেলনা নয়— শুধুমাত্র খাবার।”

হুসাম আবু আমের থাকতেন গাজার জেইতুনে। কিন্তু দখলদাররা তার বাড়ি বিমান হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন তিনি খান ইউনিসের একটি স্কুলে তাঁবুতে থাকছেন। দখলদারদের হামলায় বাড়ি হারানোর পাশাপাশি নিজের কয়েকজন আত্মীয় স্বজনকেও হারিয়েছেন তিনি। যে বাড়ি ও আত্মীয়দের সঙ্গে কয়েক দশকের সুখকর স্মৃতি ছিল তার— সেটি কয়েক মুহূর্তে দখলদাররা ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে।

হুসাম বলেন, “গত বছর, আমার সন্তানদের বলেছিলাম আগামী ঈদের আগে যুদ্ধ বন্ধ হবে এবং আগে সবকিছু যেমন ছিল আমরা ওই অবস্থায় ফিরে যাব। আমি না জেনে গত বছর তাদের মিথ্যা বলেছিলাম। এবার কিছু বলার নেই।”

তিনি বলেন, “আমি ছিলাম সেই ব্যক্তি যে পরিবারকে সব দিতাম, রক্ষা করতাম। কিন্তু এখন আমি শিশুদের গল্প শোনাই যেন বোমার শব্দে তাদের মনোযোগ না যায় এবং ক্ষুধা অনুভব না করে।”

৩৭ বছর বয়সী এ বাবা আরও বলেন, “আমি পরিবারের অনেক সদস্যকে হারিয়েছি। আমার আর কান্না করার মতো শক্তিও নেই। ঈদ আমাদের জন্য আর কোনো উৎসব নয়। আমরা যে সবকিছু হারিয়েছি, ঈদ সেটি মনে করিয়ে দেয়।”

সূত্র: দ্য নিউ আরব

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *