সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে আন্দোলনকারীরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এর মধ্যে বিকেলে পুলিশ সদর থেকে পাঠানো এক বার্তায় সন্ত্রাসী হামলায় এনায়েতপুর থানায় ১৩ জন এবং কুমিল্লায় ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার এক পুলিশ সদস্যসহ ১৪ জন নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,দুপুর ১২টার দিকে হাজার হাজার আন্দোলনকারী লাঠিসোঁটা নিয়ে এনায়েতপুর থানায় এসে হামলা চালান। এসময় আন্দোলনকারীদের হাতে লোহার রড, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র ছিল। হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হন।
অন্যদিকে রাত ৮টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যায়, এখনো থানার ভেতরে ১১টি মরদেহ এবং রাস্তার দুই পুলিশের মরদেহ পড়ে আছে। এদিকে রাত ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হতাহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারের জন্য থানায় যাচ্ছেন। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার বেলা ১২টার দিকে বেতিল থেকে একটি মিছিল এনায়েতপুর থানার দিকে আসে। অপরদিকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসাপাতাল থেকে কেজির মোড় হয়ে আরেকটি বিশাল মিছিল থানার সামনে আসে। মিছিলকারীরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে থানার গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এতে পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা গেট ভেঙে পুলিশের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে থানায় ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দিনভর ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক বলেন, আমরা খবর পেয়েছি ১৩ পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে আমাদের ফোর্স যাচ্ছে।
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের পুলিশ সুপার এনামুল হক সাগর জানান, সন্ত্রাসীদের হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন পুলিশ সদস্য এবং কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার একজন পুলিশ সদস্যসহ এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া সারাদেশে আহত হয়েছেন প্রায় ৩০০ পুলিশ সদস্য।
তিনি আরও জানান, সন্ত্রাসীরা ডিএমপির যাত্রাবাড়ী ও খিলগাঁও থানায় আক্রমণ করে ভাঙচুর চালায়।
এছাড়া টাঙ্গাইলের গোড়াই হাইওয়ে থানা, বগুড়ার সদর, দুপচাঁচিয়া ও শেরপুর থানা এবং নারুলী পুলিশ ফাঁড়ি, জয়পুরহাট সদর থানা, কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা, রংপুরের গঙ্গাচড়া, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও গংগাচড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আশুগঞ্জ থানা, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর থানা, হবিগঞ্জের মাধবপুর ফাঁড়ি, ময়মনসিংহ রেঞ্জ অফিস, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়, দিনাজপুর সদর থানা আক্রমণ করেছেন।