ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বাবুসহ ২ হাজার ৩৫৫ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) মধ্যরাতে মামলা দুটি করা হয়।
মুক্তাগাছা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম শহীদ বাদী হয়ে একটি এবং উপজেলার ৮ নম্বর দাওগাঁও ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. তারিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাগুলো করেন। দুই মামলায় মোট ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২ হাজার ৩৫৫ জনকে আসামি করা হয়।
উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন—উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেএম খালিদ বাবু এবং সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সরকার, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আরব আলী, ৯ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ২ হাজার ৩৫৫ জন। এই দুটি মামলাতেই সাবেক প্রতিমন্ত্রীকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার নথির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সাবেক পৌর মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহীদ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদকে এক নম্বর আসামি করে সাবেক মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আরব আলী, জেলা পরিষদের সদস্য ও যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম মনি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আজিজুল হক ইদু, তার ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদুল হক যদুসহ ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০০/৭০০ জনকে আসামি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে হাসিনা সরকার পতনে আগের দিন রাতে বাদীর বাড়ির সামনে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন ভাঙচুর করে। পরে তারা বাদীর বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালায়। এ সময় তারা ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
একই তারিখে উপজেলার ৮ নম্বর দাওগাঁও ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। সেখানেও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র বিল্লাল হোসেন সরকার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আরব আলী, বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীসহ ৯২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১৪০০/১৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা মুক্তাগাছা বড়হিস্যা বাজারে বিএনপির কার্যালয়ের দুই তলায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।
ওসি ফারুক আহমেদ বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পৃথক দুটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, সাবেক পৌর বিল্লাল হোসেন সরকার, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আরব আলীসহ ক্ষমতার অপব্যবহারকারী আওয়ামী লীগ নেতারা গা ঢাকা দিয়ে আছেন।