বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দলের মূল কাজ শহীদ রাষ্ট্রপতি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই আর্দশকে বাস্তবায়িত করা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুরু করেছিলেন তাকে প্রতিষ্ঠিত করা।
একই সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে নতুন স্বপ্ন দেখছেন, বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলবার জন্য তিনি যে কাজ করছেন সেই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে আজকে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি। শপথ নিয়েছি যে কোনো বাধাই আসুক, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা করা। মুক্ত বাজার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত করা এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে গড়তে কাজ করে যাব।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতার মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
তিনি বলেন, একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর সেই সময়ে দলের স্বাধীনতার ঘোষক, পরবর্তীকালে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা এবং আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের নেতৃত্বে এ দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বের করে নিয়ে এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের সূচনা হিসেবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তার দূরদৃষ্টি দিয়ে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য রাজনীতি শুরু করে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেদিন দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে দল প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তিনি জাতিকে একটি নতুন দিক নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন। জাতির সামনে একটা নতুন স্বপ্ন তুলে ধরেছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতির দূরদৃষ্টি বাংলাদেশকে আজকের বাংলাদেশে পরিণত করেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র একইসঙ্গে মুক্ত বাজার অর্থনীতি বাংলাদেশকে আধুনিক বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার যে ফাউন্ডেশন সেই ফাউন্ডেশন স্থাপন করেছেন। আজকে প্রায় ৪৬ বছর এই রাজনৈতিক দল বিএনপি; বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের একেবারে উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই দলটি তিনি সৃষ্টি করেছিলেন। সমস্ত দলগুলোকে যেখানে আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল করেছিল সেখানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। জিয়াউর রহমান যেদিন সব রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করা, গণমাধ্যমকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। অর্থনীতির নতুন নতুন একটা ধারা সূচনা করেছিলেন। আজকে জনগণ সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতীতাবাদী দলের পতাকার নিচে সমন্বিত হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯০ সালে ছাত্র জনতাকে সঙ্গে নিয়ে তৎকালীন স্বৈরাচারকে পরাজিত করে গণতন্ত্রের পথ সূচনা করেছিলেন। আজকে ২০২৪ সালে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি তার জন্য বাংদেশ জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে। দলটির সাতশ’র অধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শুধু মাত্র গণতান্ত্রিক সংগ্রামের জন্য ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আজকে এই দিনটিকে স্মরণ করব, আল্লাহ’র অশেষ রহমতে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে মুক্ত স্বাধীন পরিবেশে পালন করতে পারছি। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সবসময় নেতৃত্ব দিয়েছে, আগামীদিনের তার সঠিক রাজনীতি এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। দেশকে পুনর্গঠন করার কাজে মনোযোগ দেবে।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, এজেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিবরসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিল।