সংবাদ শিরোনাম

 

কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় বাজারে সবজির দাম হুট করে বেড়ে গিয়েছিল। এরপর কারফিউ শুরু হলে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি কমতে শুরু করে। এতে কমে আসে সবজির দাম। আজও কাঁচাবাজারে সবজির দাম রয়েছে নিম্নমুখী। গত সপ্তাহের চেয়ে বেশ কিছু সবজিতে কমেছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। পাশাপাশি কমেছে গরু ও মুরগির মাংসের দামও।

এদিকে সবজি ও মাংসের দাম কমে আসায় ক্রেতারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন, এই মুহূর্তে সবজির দাম আর বাড়ছে না বলা যায়। বরং আরও কমতে পারে।

শুক্রবার (২ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজারে সরেজমিন দেখা যায়, বাজারে সবজির দাম কমলেও সকাল থেকেই বৃষ্টি থাকায় ক্রেতার উপস্থিতি ছিল অনেক কম। অন্যান্য শুক্রবারের চেয়ে যে পরিমাণ বেচাকেনা হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি বলে জানান বিক্রেতারা। তবে বৃষ্টি কমলে ক্রেতাদের আসার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

আজকের বাজারে ভারতীয় টমেটো ১৬০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চায়না গাজর ১৭০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৬০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৭০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, উচ্ছে ৭০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, ধনেপাতা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চালকুমড়া ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০ টাকা, হালির লেবু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা করে।

গত সপ্তাহের সঙ্গে আজকের দর তুলনা করলে দেখা যায়, আজ বেশ কিছু সবজির দাম কমেছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। চায়না গাজর, কালো গোল বেগুন, উচ্ছে, করলা, পেঁপে, ঝিঙার দাম কমেছে ১০ টাকা করে। লম্বা বেগুন, সাদা গোল বেগুনের দাম কমেছে ২০ টাকা করে। আর ভারতীয় টমেটোর দাম কমেছে ৩০ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে প্রায় অপরিবর্তিত।

বাজার করতে আসা আবু তাহের বলেন, ‘সবজির দাম অনেকটাই কমেছে, এটা ভালো। করলা আমি কিছু দিন আগে ১৬০ টাকা কেজিতে কিনেছি। আর আজ কিনেছি ৭০ টাকা দিয়ে, মানে অর্ধেকেরও কম।’

সুফিয়ান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সবজির দাম অনেক কমেছে। এ রকম দাম থাকলেও আমাদের কিছুটা স্বস্তি আসে। তবে আরও দাম কমা উচিত স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার জন্য।’

এদিকে সবজি বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, ‘আন্দোলনের সময় সবজি আসতে সমস্যা হয়েছিল বলে তখন দাম বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন দাম কমতির দিকে আছে, সামনে আরও কমে যাবে। মাস দুয়েক পর শীতের সবজি আসবে, তাই দাম এখন কমই থাকবে।’

সব ধরনের পেঁয়াজের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
বিক্রেতা খলিল বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমি বেগুন বিক্রি করেছি ১২০ টাকা করে, আজ বিক্রি করছি ৬০ টাকায়। দাম এখন অনেক কমেছে। কিন্তু আজকে সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়াতে কাস্টমার পাইনি। মাল এখনও ভরপুর রয়েছে। অন্য শুক্রবার হলে এতক্ষণ অর্ধেক মাল বিক্রি হয়ে যেত। দেখা যাক বৃষ্টি কমলে কী হয়।’

আজকের বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১১০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা করে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় সব ধরনের পেঁয়াজের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

এ ছাড়া আজ লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০, বগুড়ার আলু ৭০, দেশি রসুন ২০০, চায়না রসুন ১৯০, চায়না আদা ২৮০, ভারতীয় আদা মানভেদে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, চায়না আদার দাম কমেছে ৪০ টাকা ও ভারতীয় আদার দাম কমেছে ২০ টাকা।

বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৭০০-২২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০- ৬০০ টাকা, কাতল মাছ ৪৫০- ৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০-৬০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ১০০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ২২০-৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪৫০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০- ১০০০ টাকা, টেংরা মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৭০০-১৪০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০- ১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজার অপরিবর্তিত দেখা গেছে।

এ ছাড়া আজ গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা কেজি দরে। আর বিভিন্ন দোকানে মুরগির লাল ডিম ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে। দেখা গেছে গরুর মাংসের দাম কমেছে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা।

আজ ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, কক মুরগি ২২৫ থেকে ২৩৫, লেয়ার মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ ও দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আজ ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ১০ টাকা ও কক মুরগির দাম কমেছে ৩০ টাকা।

আজ প্যাকেট পোলাওর চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওর চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৩৫, মোটা মসুর ডাল ১১০, বড় মুগডাল ১৬০, ছোট মুগডাল ১৮০, খেসারি ডাল ১০০, বুটের ডাল ১৩০, ডাবলি ৮০, ছোলা ১১৫ ও মাষকলাই ডাল ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০, খোলা ঘি ১২৫০, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫, খোলা চিনি ১৩০, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া এলাচ ৪৫০০ টাকা, দারুচিনি ১৫০, লবঙ্গ ১৬০০, সাদা গোল মরিচ ১৬০০ ও কালো গোলমরিচ ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


মতামত জানান :

 
 
 
কপিরাইট © ময়মনসিংহ প্রতিদিন ডটকম - সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | উন্নয়নে হোস্টপিও.কম