নিজস্ব প্রতিবেদক : যৌতুকের জন্য মারাত্মক জখম করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন, এরসঙ্গে ১৯৮২, ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালের সংশোধনী মিলিয়ে নতুন আইনটি করা হয়েছে।’
নতুন আইনে যৌতুকের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগে ছিল বিবাহে এক পক্ষের পিতামাতা বা অন্য কোন ব্যক্তি বিবাহের যে কোন পক্ষকে বা অন্য কোন ব্যক্তিকে বিবাহ মজলিশে বা বিবাহের আগে বা পরে বিবাহের পণরূপে দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয় সেটা হবে যৌতুক।’
‘নতুন আইনে সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোন বিবাহে বর বা বরের পিতা বা বরের মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহে জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি….এটা বরপক্ষকেই শুধু আসামী করা হয়েছে।’
নতুন আইনে যৌতুকের শাস্তি বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যৌতুক দাবি করলে বা দিলে বা এ বিষয়ে সহায়তা করলে কমপক্ষে এক বছর ও সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আগে জরিমানা নির্দিষ্ট করা ছিল না।’
শফিউল আলম বলেন, ‘যৌতুকের জন্য কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা হবে। এ শাস্তিটি নতুন।’
আইনে নতুন আরেকটি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটি হলো ভিকটিমের ক্ষতি বিবেচনায় অর্থদণ্ডসহ তাকে আমৃত্যু ভরণপোষণ প্রদান করবেন আসামি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যৌতুকের জন্য মারাত্মক যখম করলে শাস্তি যাবজ্জীবন বা ১২ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ দণ্ডের অতিরিক্ত জরিমানাও দিতে হবে। এটাও নতুন শাস্তি।’
কোনো ব্যক্তি মিথ্যা অভিযোগ বা মামলা করলে করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এজন্য এক বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
নতুন আইন অনুযায়ী যৌতুকের জন্য সাধারণ যখম করলে সর্বোচ্চ তিন বছর কমপক্ষে এক বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত একই সঙ্গে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন বলেও জানা তিনি।