নিজস্ব প্রতিবেদক : যৌতুকের দাবিতে কনেকে মারাত্মক জখমের শাস্তির পরিমাণ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৭ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর ক্ষতি বিবেচনায় এনে তাকে সারাজীবন ভরণপোষণের ব্যবস্থাও করতে হবে সাজাপ্রাপ্তকে।
যৌতুকের নতুন সংজ্ঞা দিয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা ১৯৮০ সালের ‘যৌতুক নিরোধ আইন’ সংশোধনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
খসড়া এই আইনে যৌতুককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এতে বর বা বরপক্ষের কেউ কনের কাছে টাকা পয়সা বা অর্থকড়ি দাবি করলে তা যৌতুকের মধ্যে পড়বে। আগে বর বা কনে যে কোনো পক্ষ থেকে অর্থ দাবি করলে সেটিই যৌতুকের মধ্যে পড়ত। নতুন সংজ্ঞায় এটিকে সীমিত করা হয়েছে। শুধু বরপক্ষকে এই আইনে দায়ী করা হয়েছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ‘নারী নির্যাতন বিরোধী আইনে যৌতুকের ধারাটি নতুন এই যৌতুক নিরোধ আইনে যুক্ত করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নতুন আইনে শাস্তি বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন শাস্তির বিধানও যুক্ত হয়েছে।’
শফিউল আলম বলেন, ‘যৌতুকের দাবিতে কেউ যদি কনেকে মারত্মক যখম করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন এবং অর্থদণ্ড। আর সর্বনিম্ন ১২ বছর। আর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিলে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। আর যদি সাধারণ জখম করা হয় তাহলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড। এছাড়া ভিকটিমের ক্ষতি বিবেচনায় অর্থদণ্ডসহ সারাজীবন ভিকটিমের ভরণপোষণ দেবে আসামিপক্ষ- এমন বিধানও রাখা হয়েছে নতুন আইনে।
যৌতুক আইনে আগে যৌতুক দাবির শাস্তি ছিল সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। এখন সর্বোচ্চ পাঁচ বছর শাস্তির পাশাপাশি সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেরও বিধান রাখা হয়েছে। নতুন আইনে যৌতুক দাবির বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অনধিক এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।