২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটির শোকেসে ছিল না কোনো শিরোপা। অবশেষে সেই শিরোপা খরা কাটালেন লিওনেল মেসি। যার হাত ধরে প্রথম শিরোপা ঘরে তুলেছে মায়ামি।
লিগস কাপের ফাইনালে ন্যাশভিলকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে তারা।
রোববার (২০ আগস্ট) প্রতিপক্ষের মাঠ জিওডিস পার্কে ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায়।
হোক না মাঠে লিওনেল মেসি, কিন্তু এটি যে শিরোপা নির্ধারণের মঞ্চ। এমন ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই না হলে চলে? কেবল লড়াই-ই নয়, রীতিমতো স্নায়ুক্ষয়ী শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ দেখলেন ফুটবলভক্তরা। নির্ধারিত সময়ে ১-১ সমতা, এরপর টাইব্রেকারে প্রথম পাঁচটি শটে ৪-৪, পরবর্তী চার শটে ৪-৪ এবং সর্বশেষ একটি করে নেওয়া শ্যুট আউটে ১-০ ব্যবধানে জিতে ইতিহাস গড়েছে মেসির মায়ামি।
ন্যাশভিলের ঘরের মাঠ জিওডিস পার্ক স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো ইতিহাস গড়তে নেমেছিল মায়ামি। জয় পেলে ইতিহাস হতো স্বাগতিক ন্যাশভিলেরও। মাঠে বসে ৩০ হাজার দর্শক পুরো ম্যাচে দেখেছেন টান টান উত্তেজনাপূর্ণ এক লড়াই। বলতে গেলে একেবারে পয়সা উসুল ম্যাচ!
লিগস কাপের পুরো আসরজুড়ে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সদ্য পিএসজি ছেড়ে মায়ামিতে যোগ দেওয়া আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর। আগের ৬ ম্যাচেই তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। করেছেন ৯টি গোলের পাশাপাশি এক অ্যাসিস্ট। ফাইনালের মঞ্চেও তিনিই মায়ামির হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন। তবে সেই লিড দ্বিতীয়ার্ধের পর আর তার দল ধরে রাখতে পারেনি। ৫৭ মিনিটে ন্যাশভিলে সমতায় ফেরার পর জালের দেখা পায়নি আর কোনো পক্ষই।
পেনাল্টিতে ১০-৯ গোলে ন্যাশভিলকে পরাজিত করে প্রথম শিরোপা ঘরে তোলে মায়ামি। নির্ধারিত সময়ে মায়ামির হয়ে মেসি ও ন্যাশভিলের হয়ে ফাফা পিকাউল্ট গোল করেন।
টাইব্রেকারের প্রথম পাঁচটি শট থেকে উভয় দল ৪টিতে গোল করতে সমক্ষম হয়। সেখানেও সমতা বিরাজ করায় পেনাল্টি জারি থাকে। শেষ পর্যন্ত মায়ামির গোলরক্ষক ড্রাক ক্যালেন্ডার তার শট থেকে গোল আদায় করতে পারলেও ন্যাশভিলের গোলরক্ষক এলিওট পানিক্কো গোল করতে ব্যর্থ হন। এতে করে প্রথমবারের মতো কোনো শিরোপা ঘরে তোলে মায়ামি।
এই ম্যাচকে ঘিরে টিকিটের দামেও যেন আগুন লেগেছিল। বাংলাদেশি মূল্যে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৩ লাখ টাকার কিছু বেশি অঙ্কে পৌঁছে গিয়েছিল টিকিটের দাম। তবে এত চওড়া মূল্যে টিকিট কিনে যে সমর্থকরা ব্যর্থ হননি তা বলাই যায়। ম্যাচের প্রতিটি মিনিটে বিরাজ করছিল উত্তেজনায় ভরপুর।
পুরো ম্যাচে মায়ামি প্রতিপক্ষের গোল বরাবর ৬টি শট করার সুযোগ পায় অন্যদিকে ন্যাশভিল করে ১১টি শট। সেখানে থেকে দু’দলে নির্ধারিত সময়ে একটি করে গোল আদায় করে নেয়।
প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচের ২৩ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শটে দলকে লিড এনে দেন বিশ্বকাপজয়ী মেসি। এই এক গোলের লিড ধরে রেখে বিরতিতে যায় মায়ামি। বিরতি থেকে ফিরে গোল শোধে মরিয়া হয়ে উঠে স্বাগতিকরা। অবশেষে সেই সাফল্য ধরা দেয় ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে। কর্ণার থেকে করা শট থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন ফাফা পিকাউল্ট। যদিও মায়ামি গোলরক্ষক চেষ্টা করেছিলেন বাঁচাতে কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন।
আজকের করা গোলটি নিয়ে মেসি মায়ামির হয়ে খেলা ৭ ম্যাচ থেকে ১০ গোল আদায় করে নিলেন। সেই সঙ্গে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোরার হিসেবে গোল্ডেন বুটও হস্তগত হল এ খুদে জাদুকরের।
অথচ এই ম্যাচের আগে দুই দল আটবার মুখোমুখি হয়েছিল। যেখানে ন্যাশভিলের ৪ জয়ের বিপরীতে ইন্টার মায়ামি জিতেছে ২টি। ড্র হয়েছে অন্য দুটি ম্যাচ। আর লিগস কাপে খেলা ৬ ম্যাচের সব কটি জেতা ইন্টার মায়ামি গোল করে ২১টি। অন্যদিকে ৬ ম্যাচের ৫টিতে জিতে ফাইনালে ওঠা ন্যাশভিল গোল করে ১৫টি।