ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে সুদূর মেক্সিকো থেকে বাংলাদেশ এসে বিয়ে করেছিলেন গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেস (৩২)। তবে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মাত্র একমাসের মাথায় সবাইকে কাঁদিয়ে দেশে ফিরে যেতে হয় তাকে। তারপর থেকেই স্ত্রীর কাছে যেতে ভিসার অপেক্ষায় রবিউল হাসান রুমান (২৯)। ভিসা হাতে পেলেই উড়াল দিতে চান সেই অচেনা শহর মেক্সিকোতে।
রবিউল হাসান রুমান জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পোগলদিঘা গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের রুমডো ইনস্টিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যালে ডিপ্লোমা শেষে ফ্রিল্যান্সিং করছেন।
গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেস নামের ওই তরুণী মেক্সিকোর পোএবলা শহরের ব্যবসায়ী গ্রেগ্রোরিও টরিবিওর মেয়ে। মেক্সিকোর বেনেমেরিটা অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অব পোএবলা থেকে তিনি ২০১৬ গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন।
২০১৯ সালে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর তরুণী গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেসের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় রুমানের। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ও প্রেম হয়। টানা দু’বছর প্রেমের পর গত বছরের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশে আসেন ওই তরুণী। রবিউল ও তার পরিবারের লোকজন হযরত শাহ জালাল (র.) বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। বিমান থেকে নামার পর কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ঢাকা জজ কোর্টে গিয়ে এভিডেভিটের মাধ্যমে নিজের খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের পর রবিউলকে বিয়ে করেন। নাম পরিবর্তন করে রাখেন মোছা. লাইলী আক্তার।
এরপর বাড়িতে ফিরে আসেন মধ্যরাতে। তারপর এক মাস থাকেন রুমানের বাড়িতে। বাংলাদেশি রীতি মতে ১০ ডিসেম্বর দেওয়া হয় বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। এরপর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৮ ডিসেম্বর ফিরে যেতে হয় মেক্সিকোতে। তারপর থেকেই ভিসার অপেক্ষায় রুমান।
কথা হয় রবিউল হাসান রুমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, লাইলী মেক্সিকো যাওয়ার পর তার সঙ্গে সম্পর্কের একবিন্দুও টানাপোড়েন হয়নি। যোগাযোগ হচ্ছে নিয়মিতই। গত মে মাসে ভারতের দিল্লীতেও গিয়েছিলেন। সেখানে সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। ভিসার জন্য ডাকলেই ভিসা নিতে যাবেন। এজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন রুমান।
রবিউল হাসান রুমানের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, মেয়েটা খুবই ভালো। তার সঙ্গে ছেলের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হচ্ছে। আমরাও মাঝে মধ্যে কথা বলি। তিনিও দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তার ছেলে যেন মেক্সিকোতে ভালোভাবে যেতে পারে।