ভারত শত্রুকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসা পাবে না : ফখরুল
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসা ভারত পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসকে ভন্ডুল করে দিতে আওয়ামী লীগ এখন দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে।
বাংলাদেশের মানুষের যে শত্রু, যাকে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে, তাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসা ভারত পেতে পারে বলে আমি মনে করি না।
সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদ।
আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। যে দানব আমাদের ওপর চেপে বসেছিল, সে দানব আমরা সরাতে পেরেছি। আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই, ছাত্র-জনতাকে, যারা বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে এই পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বিএনপি ১৫ বছর ধরে এ সংগ্রাম করছে। আমাদের দলের অসংখ্য মানুষ প্রান দিয়েছেন। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর মিথ্যা মামলায় বিনা দোষে কারাগারে থাকতে হয়েছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি মুক্ত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে, অনেক মায়ের অশ্রু, অনেক ভাইয়ের বুকের রক্তধারায় আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে। ফ্যাসিবাদের হাত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। আমাদের অনেক সন্তান প্রাণ দিয়েছে। অনেকে স্বামী হারিয়েছে, মা হারিয়েছে, সন্তান হারিয়েছে। এ ত্যাগ আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। এ ত্যাগকে যেন আমরা সবাই মূল্য দিই।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্বাধীন হয়েছি। ঠিকই কিন্তু স্থিতিশীল হতে পারিনি। এখনো ঠিকঠাক মতো গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। এখনো একটি অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে। এ সরকারকে কিন্তু আমাদের সবাইকে সমর্থন জানিয়ে শক্ত করে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে। এ সরকারে যারা আছেন তারা রাজনীতিবিদ নন, তারা রাজনীতি করেন না। তারা অল্প সময়ের জন্য এসে রাষ্ট্রকে ধ্বংস থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করছেন। এখন কোনো নেতিবাচক কথা বলে বা নেতিবাচক কাজ করে এ প্রচেষ্টাকে ভন্ডুল করে দেওয়া একেবারে ঠিক হবে না।
বিএনপি তাদের ৩১ দফায় রাষ্ট্রের অনেকগুলো সংস্কাকথা জানিয়েছে উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, ছাত্ররা সংস্কারের কথা বলছেন, এ সংস্কারকে আমরা স্বাগত জানাই। নতুন যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, তাকে আমাদের ধৈর্য ধরে বরণ করে নিতে হবে। যারা এই বিজয়কে যারা ম্লান করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে হয়েছে, তারা দেশদ্রোহী। তাদের রুখে দিতে হবে, তাদের পরাজিত করতে হবে আরেকটি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। আমাদের ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা পেয়েছি সে স্বাধীনতা আমরা বিনষ্ট হতে দিতে পারি না। এক ফ্যাসিবাদ গেছে, আরেক নয়া ফ্যাসিবাদ আমরা আমদানি করতে পারি না।
ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের স্মৃতিচারণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি একজন বিচক্ষণ নেতা ছিলেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি স্বৈরশাসককে পরাজিত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিল এবং বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দ্বায়িত্বে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ অনেকে।